ইনানী সমুদ্র সৈকত | কক্সবাজার

সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ

ইনানী সমুদ্র সৈকত( inani sea beach cox’s bazar ) বঙ্গোপসাগরের একটি উপকূলভূমি যা বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে একটি পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়। কক্সবাজার জেলার পর্যটন সেক্টরে ইমাজিং টাইগার হচ্ছে ইনানী। বাংলাদেশের কক্সবাজার শহর থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দক্ষিণে ও হিমছড়ি থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ইনানী প্রবালগঠিত সমুদ্রসৈকত। পশ্চিমে সমুদ্র আর পূর্বে পাহাড়ের এক অপূর্ব জায়গাটি বাংলাদেশের অন্যতম একটি পর্যটন আকর্ষণ। মেরিন ড্রাইভ সড়ক ধরে কক্সবাজার থেকে ইনানী যেতে হয়।

কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত দীর্ঘ একশো বিশ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকতের মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ইনানী সৈকত।

কখন যাবোঃ
জোয়ার-ভাটার হিসেব কষে ইনানী সমুদ্র সৈকতে যাওয়া উচিত। কেননা, জোয়ারের সময় সৈকতের প্রবাল পাথর দেখা সম্ভব নয়। ফলে ভাটার সময় যাওয়া উচিত। খুব সকালবেলা যাওয়া ভালো। এতে সুযোগ হাতছাড়া হবার সম্ভাবনা কম ও দুপুরের মধ্যে ফিরে আসা সম্ভবপর।
ইনানী এবং হিমছড়ি এক ভ্রমণেই ঘুরে আসা সম্ভব। এতে সময় আর খরচ উভয়টি বেঁচে যাবে। সকালে গিয়ে বিকেলের মধ্যে বেরিয়ে আসা যাবে দুই জায়গা থেকেই।

কিভাবে যাবোঃ
কক্সবাজার কলাতলী সৈকত লোকাল জিপে গেলে যাওয়া-আসার ভাড়া ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। রিজার্ভ জিপে ১৮০০ থেকে ২৫০০ টাকা। একটি জিপে ১০-১৫জন বসা সম্ভব। এছাড়া সিএনজি চালিত আটো রিক্সাও পাওয়া যায়, রিজার্ভ নিলে ভাড়া পড়বে ৫০০ টাকার মত।

কোথায় থাকবোঃ
বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজার। বিশ্বের সর্ববৃহৎ ও দর্শনীয় বিচ কক্সবাজারে রয়েছে আন্তর্জাতিকমানের বেশ কয়েকটি হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট। এছাড়া সরকারি ও ব্যক্তিগত ব্যবস্থাপনায় গড়ে উঠেছে ছোট বড় বিভিন্ন মানের অনেক রিসোর্ট, হোটেল ও বোর্ডিং হাউস।

কী খাবোঃ
প্রায় প্রতিটি আবাসিক হোটেল বা হোটেলের সন্নিকটে রেস্টুরেন্ট বা খাবার হোটেল রয়েছে। কক্সবাজার ভ্রমণে গিয়ে পর্যটকদের বেশি আকর্ষণ থাকে সাগরের বিভিন্ন মাছের মেন্যুর প্রতি। বিশেষ করে চিংড়ি, রূপচাঁদা, লাইট্যা, ছুরি মাছসহ মজাদার শুটকি মাছের ভর্তার প্রতিই পর্যটকদের আকর্ষণ বেশি থাকে।

যা যা দেখবোঃ
ইনানী সমুদ্র সৈকত যেমন সুন্দর আর আকর্ষণীয়, ঠিক তেমনি রোমাঞ্চকর কক্সবাজার হতে এর যাত্রা পথটি। একদিকে মেরিন ড্রাইভিং আরেকদিকে সাগর আর পাহাড়, ঝর্ণার নৈসর্গিক দৃশ্য। মোটেই একঘেঁয়েমি লাগবে না। পথিমধ্যে চলচ্চিত্রের দৃশ্যধারণের বিষয়টি ভ্রমণের আনন্দকে দ্বিগুণ করে দিতে পারে। হৈ-হুল্লুরে জীবনকে পছন্দকারীরা খোলা ছাদের জিপ ব্যবহার করতে পারেন। দুপাশে সাগর পাড়ের গাছপালা রয়েছে। বেশ উঁচু সেঁতু পার হয়ে হিমছড়ির রাস্তা শুরু হবে। রাস্তার একপাশে উঁচু পাহাড়, আরেক পাশে সাগর। নানারকম পাখির কলতান শুনতে পাওয়া যায়।

প্রবালের উপর দাঁড়িয়ে সাগরের দৃশ্য দেখার মজাই আলাদা। সাগরের ঢেউগুলো প্রবালের গায়ে আঘাত লেগে পায়ের কাছে আছড়ে পরে। স্বচ্ছ জলের তলায় দেখা যায় বালুর স্তর। অনেকসময় হরেক রকম মাছের ছোটাছুটি দেখা যায়। বিস্তীর্ণ বালুকাবেলায় ছুটে বেড়ায় হাজারো লাল কাঁকড়ার দল।
পাহাড়ে নানারকম ঝোপঝাড়ের সাথে সাথে সমুদ্র সৈকত পাড়ে দেখা যায় সুদূর ঝাউগাছে সারি। মাঝে মাঝে নারিকেল গাছের এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকার দৃশ্য যা সৌন্দর্য্যের ভিন্নমাত্রা প্রকাশ করে।

জায়গায় জায়গায় দেখা যায় পাহাড়ী ছোট ছোট ঝর্ণা। শুকনো মৌসুমে সবগুলোতে পানি দেখা যায় না। পথে গাড়ি থামিয়ে ঝর্ণার পারে ঘুরে আসতে পারেন। রাস্তার অপর পার্শ্বে সাগর। মাঝে মাঝে জেলে নৌকা বালুর উপর সারি করে রাখার দৃশ্য দেখা যায়।

ইনানী সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের প্রধান সমুদ্র সৈকত থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। সাগর পাড়ে বালুর উপর বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে আছে শত শত বছরের পুরাতন পাথর। সাগরের ঢেউ আছড়ে পড়ে পাথরের উপর। কাছে থাকলে সমুদ্রস্নানের অর্ধেক কার্য সম্পন্ন হয়ে যায়।

আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে বা এই বিষয়ে কোন কিছু জানানোর থাকলে নীচের মন্তব্য বিভাগে লিখতে ভুলবেন না । আপনার ভ্রমণ পিয়াশি বন্ধুদের সাথে নিবন্ধটি শেয়ার করে নিন যাতে তারাও জানতে পারে ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *