অক্সফোর্ড মিশন | বরিশাল

সংক্ষিপ্ত বিবরনঃ

বাংলার ভেনিস( Oxford Mission ) বলা হয় বরিশালকে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি এখানে আছে ঐতিহাসিক এবং পুরাকীর্তির নানা নিদর্শন। বরিশালের ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সাথে এইসব স্থাপনা ওতপ্রোতভাবে মিশে আছে। আজকে আপনাদের সামনে তুলে ধরবো বাংলার এই ভেনিসের বুকে গড়ে ওঠা সুরম্য এক স্থাপনার কথা। এটি হচ্ছে ঐতিহাসিক অক্সফোর্ড মিশন চার্চ বা এপিফ্যানি গির্জা।

গ্রিক স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত এই গির্জাটি প্রায় ১১৫ বছরের পুরনো। দীর্ঘ এই সময় ইতিহাসের নানা বাক বদলের পর আজও এটি অত্যন্ত অক্ষুণ্ণ ভাবে নিজের ঐতিহ্য আর ধর্মীয় গুরুত্ব বহন করে চলছে। কেতাবি নামে অক্সফোর্ড মিশন চার্চ হচ্ছে এপিফানি উপাসনালয়। এই গির্জাটি এশিয়া মহাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম গির্জা। লাল ইটের তৈরি হওয়ায় এটি ‘লাল গির্জা নামেও সবার মধ্যে পরিচিত। গির্জাটির আরেকটি আকর্ষণীয় বিষয় হচ্ছে এশিয়ার সবচেয়ে বড় ঘণ্টা রয়েছে এখানেই। যা দিনে ৭ বার প্রার্থনার পূর্বে বেজে উঠে।

দেশের দৃষ্টিনন্দন পুরাকীর্তিগুলোর অন্যতম এই অক্সফোর্ড মিশন গির্জাটির নির্মাণরীতি, ধরন এবং স্থাপত্যশৈলী আকর্ষণ করে সকলকে। বিশাল আকার এবং নান্দনিক এই গির্জাটির উপর থেকে নিচ অবধি ১০০ ফুট। যদিও এর পুরোটাই এক তলা ভবন। বাহির থেকে দেখে মনে হবে এটি বুঝি বেশ কয়েক তলা ভবন। প্রকৌশলী ফ্রেডেরিক ডগলাসের নেতৃত্বে ভবনটি নির্মাণ হলেও সিস্টার এডিথের স্কেচ ও ডিজাইন অনুসারে ফাদার স্ট্রং এ গির্জার নকশা চূড়ান্ত ও উন্নত করেন। এই চার্চের কাজ সম্পন্ন হয় দুই ধাপে। প্রথম ধাপের কাজ শেষ হয় ১৯০৩ সালে এবং দ্বিতীয় ধাপের কাজ শেষ হয় ১৯০৭ সালে।

গির্জার ভেতরের মেঝেতে আছে পাথরের তৈরি চৌবাচ্চা, ব্যাপ্টিজম বাথ বেসিন। মূল দরজা টি দক্ষিণ মুখী। তবে তিন দিকে আরো অনেক গুলো দরজা রয়েছে। ভবনের উপরে পূর্ব দিকে আছে কালো গম্বুজ।
এই গির্জার মূল আকর্ষণ হলো এর বিশাল আকৃতির প্রার্থনা কক্ষ। ৪০ টি খিলানের উপর দাঁড়িয়ে থাকা ভবনটির ছাদ কাঠের তৈরি। ফ্লোর সুদৃশ্য মার্বেল টাইলস দ্বারা সাজানো। মূল বেদির উপর রয়েছে একটা বড় ক্রস।

এমন নান্দনিক কাঠামোর অদ্বিতীয় গির্জাটি প্রায় ৩৫ একর জায়গার উপর অবস্থিত। পাম গাছ দিয়ে অক্সফোর্ড মিশনের চারপাশে। মূল জমিটি চারপাশ থেকে দেয়াল দিয়ে ঘেরাও। এর সীমানা প্রাচীরের ভেতর একটি কিংবা দুটো নয় ছোট বড় মিলিয়ে মোট ১৩ টি পুকুর রয়েছে। এছাড়াও আছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আবাসিক ছাত্র হোস্টেল, ফাদার ও সিস্টারদের আবাসন, লাইব্রেরি এবং হাসপাতাল।

কিভাবে যাবেনঃ

বরিশাল শহরে একাধিক গির্জা থাকায়, শুধু অক্সফোর্ড মিশন চার্চের কথা জিজ্ঞাসা করলে স্থানীয় রিকশাওলা বা অটোরিকশা চালকেরা নাও চিনতে পারেন। তবে বগুড়া রোড বললে সবাই চিনবে। এ রোডে অবস্থিত বরিশাল গভর্নমেন্ট গার্লস হাই স্কুল থেকে পশ্চিম দিকে অল্প একটু এগোলেই অক্সফোর্ড মিশনারি চার্চের প্রবেশ পথ।

আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে বা এই বিষয়ে কোন কিছু জানানোর থাকলে নীচের মন্তব্য বিভাগে লিখতে ভুলবেন না । আপনার ভ্রমণ পিয়াশি বন্ধুদের সাথে নিবন্ধটি শেয়ার করে নিন যাতে তারাও জানতে পারে ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *