সংক্ষিপ্ত বিবরনঃ
মাদারীপুর জেলার ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলোর মধ্যে সেনাপতি দিঘি( Senapati Dighi )অন্যতম। ১৬৬৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর মোঘল আমলে শায়েস্তা খাঁর বড় ছেলে বুজুর্গ উমেদ খাঁর বিশ্বস্ত সেনাপতি ইসলাম খাঁ এই দিঘি খনন করেন। প্রায় সাড়ে ৩শ’ বছর ধরে নিজ মহিমায় কালের সাক্ষী হয়ে আজও টিকে আছে।
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার বালিগ্রাম ইউনিয়নের আমড়াতলা ও খাতিয়াল গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে সেনাপতির দিঘির অবস্থান। প্রায় ১৫ একর এই দিঘির খননকাজ নিয়ে রয়েছে মতান্তর। জনশ্রুতি আছে, মোঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের আমলে সুবেদার শায়েস্তা খাঁর নেতৃত্বে মগ জলদস্যুদের বিতাড়িত করার জন্য তার বড় ছেলে বুজুর্গ উমেদ খাঁ ২৮৮টি নদীতে অভিযান পরিচালনা করেন। বর্তমান বাংলাদেশের চট্টগ্রাম থেকে মগ জলদস্যুদের বিতাড়িত করে তার সেনাবাহিনীর একটি অংশ বাকেরগঞ্জ বর্তমান বরিশাল অঞ্চলে অভিযান চালায়। সেখান থেকে মগ সৈন্যদের বিতাড়িত করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়।
ঢাকা যাওয়ার পথে মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার বালিগ্রাম ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থান আমড়াতলা ও খাতিয়াল এলাকায় কিছুদিন অবস্থান করে। ওই সময় পানি ও জলের অভাব মেটানোর জন্য বুজুর্গ উমেদ খাঁর বিশ্বস্ত সেনাপতি ইসলাম খাঁর সেনাবাহিনী এ দিঘিটি খনন করে বলে এর নাম হয় ‘সেনাপতির দিঘি’। আবার কারও কারও মতে, এ অঞ্চলের পানিতে লবণাক্ততা বেশি থাকায় মিষ্টি পানির প্রয়োজনে তার সেনাবাহিনী এ দিঘিটি খনন করে। কথিত রয়েছে, দিঘি খননের পর পানি না ওঠায় সেখানে ঘৌড়দৌড় হয়। ঘৌড়দৌড়ের একপর্যায়ে দিঘির দক্ষিণ দিক থেকে পানি উঠতে শুরু করে এবং মুহূর্তের মধ্যে দিঘিটি পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়।
আরও কথিত রয়েছে, ওই সময় দিঘির কাছে অনুষ্ঠানাদির জন্য থালা-বাসন চাইলে রাতে তা দিঘির পাড়ে উঠে থাকত। অনুষ্ঠান শেষে সেখানে রেখে গেলে পরদিন সকালে সেখানে আর তা দেখা যেত না। এই অঞ্চলে একসময় একটি বিরাট বটগাছ ছিল। সেই বটগাছে প্রচুর হনুমান বসবাস করত। বটগাছ ও হনুমানকে দেবতা ভেবে হিন্দুরা দিঘিতে গোসল করে এই বটগাছের নিচে এসে পুজো দিত। এখনও হিন্দু-মুসলমান অনেকেই মনে করেন দিঘিটির প্রাণ আছে।
কিভাবে যাবেনঃ
মাদারীপুর শহরের ইটেরপুল থেকে দক্ষিন দিকে গগনপুর বাজার গিয়ে পশ্চিম দিকে রাস্তা দিয়ে সোজা রাস্তার মাথায়।
থাকার ব্যবস্থা:
সেখানে কোন থাকার ব্যবস্থা নেই। মাদারীপুর শহরে অনেক আবাসিক হোটেল রয়েছে।