সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ
ধর্মসাগর( dhormo sagor dighir ) বাংলাদেশের কুমিল্লা শহরে অবস্থিত একটি বিশাল জলাধার। এটি একটি প্রাচীন দিঘি। এটি কুমিল্লা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। ধর্মসাগরের আয়তন ২৩.১৮ একর।
ধর্মসাগর উৎসর্গের সময় যে তাম্রলিপি প্রদান করা হয় তা নিন্মরূপ:-
“চন্দ্র বংশেতে মহামাণিক্য নৃপবর, তানপুত্র শ্রী ধর্মমাণিক্য শশধর।
তেরশ আশিশতকে সোমবার দিনে, শুক্লপক্ষ এয়োদশী মেষ সংক্রমনে।।
তাম্রপত্রে লিখি দিলাম এসব বচন, আমা বংশ মারি যে বা হয় রাজন।
তাহার দাসের দাস হইবেক আমি, আমা কীর্তি ব্রক্ষাবৃত্তি না লঙ্ঘিত তুমি।।”
(রাজমালা দ্বিতীয় লহর ৩য় পৃষ্ঠা)।
“চন্দ্র বংশোদ্ভব মহা মাণিক্যের সুধীপুত্র শশধর সদৃশ শ্রী শ্রী ধর্ম মাণিক্য ১৩৮০ মেষ সংক্রমনে (চৈত্র মাসের শেষ তারিখে) সোমবার শুক্ল এয়োদশী তিথিতে কৌতুকাদি তাষ্ট বিপ্রকে শষ্য-সমন্বিত ফল ও বৃক্ষাদি পূর্ণ উনত্রিশ দ্রোণ ভূমি দান করিলেন। আমার বংশ বিলুপ্ত হইলে যদি এই রাজ্য অন্যকোন ভূপতির হস্তগত হয়। তিনি এই বৃহ্মবৃত্তি লোপ না করিলে আমি তাহার দাসানুদাস হইব।”
বর্তমানে ধর্মসাগরের আয়তন ২৩:১৮ একর। এটির পূর্বে কুমিল্লা স্টেডিয়াম ও কুমিল্লা জিলা স্কুল, উত্তরাংশে সিটি কর্পোরেশনের উদ্যান ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় অবস্থিত। কুমিল্লার শহরবাসীর নিকট এই দীঘিটি একটি বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। এখানে অবকাশ উদযাপনের নিমিত্ত প্রতিদিন বিপুল জন সমাগম হয়ে থাকে। এছাড়া সারাদেশেই ধর্মসাগরের প্রসিদ্ধি রয়েছে।
ধর্মসাগরের উত্তর কোণে রয়েছে রাণীর কুঠির, পৌরপার্ক। পূর্ব দিকে কুমিল্লা স্টেডিয়াম আর পশ্চিম পাড়ে বসার ব্যবস্থা আছে। স্থানীয় অধিবাসী ছাড়াও পর্যটকের আগমন ঘটে। দিঘিপাড়ের সবুজ বড় বড় গাছের সারি ধর্মসাগরকে দিয়েছে ভিন্ন মাত্রা। তাছাড়াও শীতকালে ধর্মসাগরে প্রচুর অতিথি পাখির আগমন ঘটে।
কিভাবে যাবেনঃ
ঢাকার যেকোনো বাস কাউন্টার (সায়দাবাদ, কমলাপুর, আরামবাগ, মতিঝিল, গুলিস্তান ইত্যাদি) থেকে কুমিল্লার বাসে উঠবেন তাহলে আপনি সরাসরি শাসনগাছা নামবেন (ভাড়া নিবে ১৮০-২৭০টাকা)। আর যদি নোয়াখালী/ফেনী/চট্টগ্রামগামী বাসে উঠেন তাহলে আপনাকে আলেকারচর বিশ্বরোড নামবেন (ভাড়া নিবে ১৫০-২০০টাকা) । উইখান থেকে শাসনগাছার অনেক লোকাল বাস পাবেন ভাড়া নিবে সর্ব্বোচ্চ ১০টাকা । পথে যানজট না থাকলে ১.৪৫মিঃ/২ ঘণ্টার মধ্যেই কুমিল্লা পৌঁছে যাবেন। শাসনগাছা নেমে রিক্সায়/অটো নিবেন ২০-৩০ টাকা। এক বিকেলে ঘুরে শেষ করা যাবে, তাই একদিনের প্ল্যান থাকলে সকাল বেলা চলে যাওয়াই ভালো।