Bhatpara Nilkuthi

ভাটপাড়ার নীলকুঠি | মেহেরপুর

সংক্ষিপ্ত বিবরনঃ

ভাটপাড়া নীলকুঠি( Bhatpara Nilkuthi ) বাংলাদেশের মেহেরপুরে অবস্থিত একটি নীলকুঠি। ব্রিটিশ শাসনামলে এদেশে নীল চাষ পরিচালনার জন্য ইংরেজরা বিভিন্ন স্থানে কুঠি গড়ে তোলে যা নীলকুঠি নামে পরিচিত। কাজলা নদীর তীরে গড় ওঠা একই সরল রেখায় দক্ষিণে (আনুমানিক) ১২ কিলো মিটার দুরে অবস্থিত আমঝুপি নীলকুঠি । সমসাময়িক সময় নির্মিত ;সেখানকার এক প্রস্তর ফলকে লেখা আছেঃ

ইতিহাস একটি জাতির জীবনের ধারাবাহিক চলচ্চিত্র এবং তার সত্যতার স্মারক। ‘মৌন অতীত’ কে সে মানুষের কাছে বাঙ্ময় করে তোলে নির্মোহ-নিরপেক্ষতায়। ইতিহাস তাই গৌরব-গর্ব ও কলঙ্ক দায়কে একসূত্রে গেঁথে প্রকাশের দায়িত্ব গ্রহণ করে। এই ইতিহাসের সড়ক বেয়েই মানুষের চিরকাল যাওয়া-আশা, প্রবাহমান জীবনস্রোত এমনি করে বয়ে চলে কাল থেকে কালান্তরে। ইতিহাসের এমনি এক ধূসর পথে সীমান্ত-শহর মেহেরপুরের কোল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে আমঝুপি।

এই পথে একদিন মোঘল-সেনাপতি মানসিংহের বিজয়-রথ ছুটেছে, এই পথে ভাস্কর পণ্ডিতের বর্গীদল ধূলি উড়িয়ে গেছে লুণ্ঠনের কালো হাত বাড়িয়ে, বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার অধিপতি নবাব আলীবর্দ্দী খাঁ-র মৃগয়ায় স্মৃতিও রয়েছে এইখানে। পলাশীর পরাজয়ের নীল-নকশাও রচিত হয়েছিল এইখানে-এই আমঝুপিতে। জনশ্রুতি আছে যে, এখানেই রবার্ট ক্লাইভের সঙ্গে মীরজাফর ও ষড়যন্ত্রীদের শেষ বৈঠক হয়েছিল এবং তার ফলে শুধু নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার ভাগ্য বিপর্যয় ঘটেনি, বাঙালী হারিয়েছিল তার স্বাধীনতা।

ইংরেজ আমলের সূচনাপর্বে বাংলার নির্যাতিত মানুষের নীল-রং-রক্তে গড়ে ওঠে আমঝুপি নীলকুঠি। কুঠিয়াল কেনী-সিম্পসন-ফার্গুসনের সতীর্থদের অত্যাচার-নির্যাতন-শোষণের স্মৃতি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে কুঠি আমঝুপি। নির্যাতিত নীলচাষীর দুর্বার আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে একদিন বাংলার বুক থেকে নিশ্চিহ্ন হলো নীলচাষ। হাতবদল হয়ে আমঝুপি নীলকুঠি মোদিনীপুর জমিদারী কোম্পানির কাঁচারীতে পরিণত হয়। দেশভাগের পর জমিদারী উচ্ছেদের সঙ্গে সঙ্গে সে অধ্যায়েরও সমাপ্তি ঘটে। বিবর্তনের ধারা বেয়ে আরেক ইতিহাসের জন্ম হয় ১৯৭৮ সালের ১৩ই মে, খুলনা বিভাগ উন্নয়ন বোর্ডের ‘আমঝুপি অধিবেশনে’। এ ইতিহাস অতীতের শোষণ-বঞ্চনা-নির্যাতনের স্মৃতি ভুলিয়ে দিয়ে মানুষের রুচি-শ্রম-প্রগতির পথে অভিযাত্রার ইতিহাস। এই সভায় আমঝুপি স্বীকৃতি পায় পর্যটন কেন্দ্ররূপে। আঠারো লাখ দুই হাজার টাকা ব্যায়ে আমঝুপি কুঠিবাড়ী সংলগ্ন এলাকায় ‘আমঝুপি’ নামের বিলীয়মান স্মৃতিকে পুনর্জাগ্রত করার প্রয়াসে আম্রকানন সৃষ্টিসহ গৃহীত হয়।

কিভাবে যাবেনঃ

গাংনী উপজেলা সদর থেকে সড়ক পথে দুরত্ব ৭ কি: মি: । বাস, স্থানীয় যান টেম্পু/লছিমন/করিমন এর সাহায্যে ২০মিনিটে ভাটপাড়া নীলকুঠিতে পৌঁছানো যায়।

আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে বা এই বিষয়ে কোন কিছু জানানোর থাকলে নীচের মন্তব্য বিভাগে লিখতে ভুলবেন না । আপনার ভ্রমণ পিয়াশি বন্ধুদের সাথে নিবন্ধটি শেয়ার করে নিন যাতে তারাও জানতে পারে ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *