সংক্ষিপ্ত বিবরনঃ
কালের সাক্ষীর নিদর্শন অসংখ্য রাজবাড়ী( Dalal Bazar Jamidar Bari ) আমাদের দেশের ঐতিহ্য ও সৌন্দর্যের এক অনন্য প্রতীক। অতীতের স্মৃতি বিজড়িত এসব রাজবাড়ী র সৌন্দর্য মুগ্ধ করে সকল ভ্রমণ প্রেমীদের। আর তাই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন প্রাচীন এই জমিদারবাড়িগুলো ভ্রমনপ্রেমীদের প্রিয় গন্তব্য। তেমনি কালের নীরব সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে নান্দনিক সৌন্দর্যের দালাল বাজার জমিদার বাড়ি। যেকোনো সময় ছুটি নিয়ে কিংবা অবসরে ঘুরে আসতে পারেন চমৎকার এই রাজবাড়ী থেকে। এর শৈল্পিক সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবে।
লক্ষ্মীপুরের অন্যতম প্রাচীন স্থাপনা দালালবাজার জমিদার বাড়ি। লক্ষ্মীপুর জেলা সদর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরত্বে ঢাকা-রায়পুর সড়কের সঙ্গে অবস্থিত দালাল বাজার-সংলগ্ন জমিদার বাড়িটি দর্শনার্থীদের দারুণ আকর্ষণের জায়গা। কালের সাক্ষী হয়ে আজো দাঁড়িয়ে আছে তিনশ বছরের পুরনো দালাল বাজার জমিদার বাড়ি। বাজারের পাশেই ১৪ একর সম্পত্তিতে রয়েছে পরিত্যক্ত রাজ গেট, জমিদারি প্রাসাদ, অন্দরমহল, শান বাঁধানো ঘাট, জমিদার বাড়ির প্রাচীর, নির্মাণ সামগ্রী, বিশেষ করে কয়েকটন ওজনের লোহার বিম, বিরাটাকার লোহার সিন্দুক, নৃত্যশালা, বহিরাঙ্গন, তিনটি পুকুর। সুন্দর সাজানো গোছানো বাড়িটি দেখলে জমিদারের নান্দনিক রুচির পরিচয় পাওয়া যায়।
সাড়ে সাত একর জমির উপর তৈরি বাড়ির ভেতরে চারটি পুকুর, সাতটি ভবন ও একটি বিশাল বাগান রয়েছে। চোখ জুড়িয়ে যাওয়ার মতো সুন্দর এই জমিদার বাড়ির সামনে ১৬ একর জমির উপর রয়েছে খোয়াসাগর দিঘি। শীতকালে ওই দিঘিতে অতিথি পাখির কলতানও দৃষ্টি কাড়ে সবার। ধারণা করা হয় জমিদার ব্রজবল্লভ রায় মানুষের পানীয় জল সংরক্ষণে দীঘিটি খনন করেন। দীঘিটি এতটাই দীর্ঘ যে এর একপ্রান্তে তাকালে আরেক প্রান্তে কুয়াশাময় মনে হয়। এই দিঘি নিয়ে নানান কল্পকাহিনী প্রচলিত আছে। খোয়াসাগর দিঘির পাশে রয়েছে প্রায় দুইশ বছরের পুরনো চারটি মঠ। এছাড়া বাড়ির পাশেই রয়েছে শত বছরের পুরনো দালাল বাজার শ্রী শ্রী জিও আখড়া মন্দির।
লক্ষ্মীপুর জেলার নামকরণের সঙ্গে এই জমিদার বাড়ির সম্পর্ক রয়েছে। ধারণা করা হয় জমিদার লক্ষ্মী নারায়ণ এর নাম অনুসারে প্রথমে লক্ষ্মীপুর জেলার নামকরণ করা হয়। তবে শুরু থেকেই লক্ষ্মীপুর জেলা ছিল না। এটি প্রথমে একটি গ্রাম ছিল। তারপর ১৮৬০ সালে এটিকে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় উন্নীত করা হয়। এছাড়া ১৯৮৪ সালে এটিকে লক্ষ্মীপুর জেলা ঘোষণা করা হয়।