সংক্ষিপ্ত বিবরনঃ
বাংলাদেশে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য দর্শনীয় স্থান( Rudrokor Moth )। তেমনই এক ঐতিহাসিক নিদর্শন শরীয়তপুরের রুদ্রকর জমিদার বাড়ি মঠ। স্থাপত্যশৈলীর এক অপূর্ব প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শন এ মঠ। সময় পেলে ঘুরে আসতে পারেন এ মঠ থেকে। শরীয়তপুর জেলার রুদ্রকর ইউনিয়নের রুদ্রকর গ্রামে ঐতিহ্যবাহী রুদ্রকর জমিদার বাড়িটি অবস্থিত।
এটি রুদ্রকর জমিদার বাড়ি মঠ হিসেবে পরিচিত হলেও মূলত একটি মন্দির। মন্দিরের একটি প্রস্তরলিপি থেকে জানা যায়, রুদ্রকর এলাকার বাবু গুরুচরণ চক্রবর্তী নামের একজন হিন্দু ধাপে ধাপে এই মন্দিরটি নির্মাণ করেন। ধারণা করা হচ্ছে, মন্দিরটি নবাব আলীবর্দী খানের আমলের কোনো একসময়ে (১৩০৫-১৩১৫ বঙ্গাব্দ) নির্মাণ করা হয়েছে।
মা রাশমণি দেবীর সমাধিকে অমর করে রাখার জন্য তৎকালীন জমিদার বাবু গুরুচরণ চক্রবর্তী মন্দিরটি নির্মাণ করেন। এরমধ্যে ১৮৯৮ সালে মঠটি পুনর্নির্মাণ করা হয়েছিল।
এতে একটি বড় শশ্মান মন্দির রয়েছে। মন্দিরটির মূল উপাসনালয় কক্ষের সঙ্গে থাকা বারান্দার চার কোণায় চারটি ছোট মন্দির (মঠ)। এরমধ্যে বড় মন্দিরটির উচ্চতা প্রায় ২০ মিটার। চার কোণায় চারটি ছোট মন্দির যথাক্রমে প্রায় ১.৯৫ মিটার। এছাড়া তৃতীয় তলায় মূল টাওয়ারের গায়ে চারপাশে চারটি দেবী মূর্তির অলঙ্করণ রয়েছে।
মঠটির সামনে রয়েছে বড় একটি পুকুর। মঠটি তৈরির সময় পুকুরটি খনন করা হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। মঠটির বাহিরে ও ভেতরে অসাধারণ এবং সমসাময়িক কারুকাজ শোভিত। তবে মূল স্থাপত্য সৌন্দর্যের মাঝে আনন্দ জাগায় মঠটির বিভিন্ন অংশে টিয়া পাখির বাসা। রয়েছে পাখির কলকাকলি। বিশেষকরে টিয়া পাখির কিচিরমিচির মুগ্ধ করছে এলাকাবাসী ও পর্যটকদের।
রুদ্রকর জমিদার বাড়ির প্রবেশপথের মূল ফটকের ওপরে লেখা ‘শ্রী শ্রী লক্ষ্মী নারায়ণ ও নীলমণি চক্রবর্তী মহাশয়কৃত দালানের পুনঃসংস্কার, ১৮৯৮ বঙ্গাব্দ’। বর্তমানে জমিদার বাড়ির অপূর্ব নির্মাণশৈলীর তিনটি ভবন অস্তিত্ব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ভবন তিনটির মধ্যে দুটি তিনতলা বিশিষ্ট ছিল, তা দেখলেই বোঝা যায়। অপর ভবনটির প্রথমতলার বেশি অবশিষ্ট নেই।