সংক্ষিপ্ত বিবরনঃ
হরিশচন্দ্র পাঠ( Harish Chandra Mound Palace ) বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার খুটামারা ইউনিয়নের একটি গ্রাম। একে সেখানকার রাজা হরিশচন্দ্রের নাম অনুসারে গ্রামটির নামকরণ করা হয়। রাজা হরিশচন্দ্র দানবীর হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এ অঞ্চলে তাকে নিয়ে অনেক পালাগান, যাত্রাপালা রচিত হয়েছে। কথিত আছে রাজা হরিশ্চন্দ্রের কন্যা অধুনা’র সাথে রাজা গোপী চন্দ্রের বিয়ে হয়। তৎকালীন প্রথা অনুসারে গোপী চন্দ্র দান হিসেবে তার ছোট শ্যালিকা পদুনাকেও পান। এ নিয়েও অনেক গল্প প্রচলিত আছে। হরিশচন্দ্র পাঠ গ্রামে অনেক প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ আজও তার স্মৃতি বহন করছে। হরিশচন্দ্রের শিবমন্দিরে বছরে ৩টি উৎসব এই মন্দিরকে ঘিরে বেশ ধুমধাম করে পালিত হয়।
হরিশচন্দ্র পাঠ গ্রামে একটি পত্নতত্ত্ব নিদর্শন স্থান রয়েছে। এই নির্মাণাধীন জায়গাটি সংস্কারের অভাবে অনাদর অবহেলায় নুইয়ে পড়ে আছে। জায়গাটি দেখলে একটি মাটির স্তর বলে মনে হয়। প্রাথমিক অবস্থায় এ মাটির স্তরটি ৫০-৬০ ফুট উপরে ছিল, কিন্তু ধীরে ধীরে এর উচ্চতা কমে বর্তমানে ১০ ফুট এসেছে। এই স্থানটিতে রাজা হরিশচন্দ্র একটি শিবমন্দির নির্মাণ করছিলেন, কিন্তু তার মৃত্যুতে মন্দিরের কাজ তিনি সমাপ্ত করতে পারেননি। তার এই অসমাপ্ত কাজকে সমাপ্ত করার লক্ষ্যে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কথিত আছে, মন্দির কিংবা তার আশপাশে এক টুকরো মাটি, ইট বা পাথর স্পর্শ করতে পারে না। এ জায়গাতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য ইট বা পাথর। কিন্ত এক টুকরো ইট নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা কারও শক্তি নেই। কারণ কোন ব্যক্তি ইট বা পাথর নিয়ে গেলে, তার নাক মুখ দিয়ে রক্তপাত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। প্রাথমিক অবস্থায় বেশ বিষ্ণুমূর্তিসহ অসংখ্য মূতি ছিল বলে জানা যায়।
ব্রিটিশ সরকারের আমলে এখানে খননের জন্য ১২৫ জনকে নিয়োগও দেওয়া হয়। এদের মধ্যে ছিলেন দেশি- বিদেশি বৈজ্ঞানিক, সেনাবাহিনী ও পুলিশ। দীর্ঘ সময় খনন কাজের পরে তৃতীয় দিন তারা একটি দরজার মুখ দেখতে পান। খুঁজে পাওয়া মন্দিরের দরজা দিয়ে কর্মরত ৮ ব্যক্তি ভিতরে প্রবেশ করে। কিন্তু তারা ভিতরে ঢুকতেই মন্দিরের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। এতে খননকারী দল ঘাবড়ে যায় এবং পরের দিন খননে কাজ বন্ধ করে চলে যায়। সেই ৮ জন ব্যক্তির ভাগ্যে কি ঘটে ছিল, তা আজও জানা যায়নি। তারপর থেকে এ মন্দিরের আর কোন সংস্কার কাজ করা হয়নি।
কিভাবে যাবেনঃ
নীলফামারী শহর থেকে সড়কপথে জলঢাকা উপজেলার খুটামারা ইউনিয়নের হরিশ্চন্দ্র পাঠে যাওয়া যায়।