সংক্ষিপ্ত বিবরনঃ
রায়েরকাঠি জমিদার বাড়ি( Rayerkathi Zamindar Bari )বাংলাদেশ এর পিরোজপুর জেলার পিরোজপুর সদর উপজেলার রায়েরকাঠি গ্রামে অবস্থিত এক ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি।
ভারতবর্ষে মোগল সম্রাট শাহজাহান শাসনামলে পিরোজপুরের রায়েরকাঠি নামক জায়গা এই জমিদার বাড়িটির গোড়াপত্তন হয়। মূলত এখানে বন-জঙ্গল ছিল। এগুলো পরিষ্কার করেই এখানে এই বাড়িটি তৈরি করা হয়। যার ফলে এখানের নামকরণ করা হয় রায়েরকাঠি। মোগল সম্রাটের শাসনামলে যুবরাজ সেলিম অর্থাৎ সম্রাট জাহাঙ্গীর বিদ্রোহ করে বর্তমান পিরোজপুর, ঝালকাঠি ও বাগেরহাট জেলার কিছু অংশ নিয়ে “সেলিমাবাদ” নামে একটি পরগণা সৃষ্টি করেন। পরবর্তীতে তিনি উক্ত এলাকার রাজস্ব আদায়ের জন্য মোদন পালকে দায়িত্ব দেন। মোদন পাল আবার তার ছেলে শ্রীনাথকে উক্ত রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব দেন।
রাজস্ব আদায়ের জন্য শ্রীনাথ বর্তমান ঝালকাঠির লুৎফুবাদ নামক গ্রামে একটি কাছারিঘর স্থাপন করেন এবং সেখান থেকে অতি সু-দক্ষতার সাথে রাজস্ব আদায়ের কাজ পরিচালনা করতে থাকেন। যার ফলস্বরূপ তিনি মোগল সম্রাটের কাছ থেকে “রাজা” উপাধি লাভ করেন। এরপর রাজা শ্রীনাথের ছেলে রুদ্র নারায়ণ রায় চৌধুরী বর্তমান পিরোজপুরের রায়েরকাঠি এলাকায় বিশাল বন-জঙ্গল পরিষ্কার করে জমিদার বাড়ি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি জমিদার বাড়ি তৈরির সময় কালী মন্দিরও তৈরি করছিলেন। এই কালী মন্দির তৈরি করতে গিয়ে তিনি তখনকার সময়ের নিম্নবর্ণের হিন্দু পাঁচজনের মুণ্ডু কেটে তার উপর মূর্তি স্থাপন করেন। পরবর্তীতে তার এই নিষ্ঠুর কার্যক্রমের কথাটি ঢাকার প্রাদেশিক সুবেদার শাহবাজ খানের কানে যায়। এতে তিনি রাগান্বিত হয়ে বিচার করে রুদ্র নারায়ণকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন।
যা হাজার হাজার মানুষের সামনে বাঘের খাঁচায় তাকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি খাঁচার মধ্যে বাঘের সাথে লড়াই করে বাঘকে মেরে ফেলেন। এ খবর সুবেদারের কাছে গেলে তিনি রুদ্র নারায়ণের মৃত্যুদণ্ড মওকুফ করে দেন। এতে রুদ্র নারায়ণ তাঁর এই নিষ্ঠুর কৃতকর্মে লজ্জিত হয়ে জমিদার বাড়িতে না ফিরে ছেলে নরোত্তম নারায়ণ রায়কে জমিদারীত্ব দিয়ে কাশি চলে যান। সেখানে তিনি আমৃত্যু সন্ন্যাস জীবন পালন করেন।
কিভাবে যাবেনঃ
পিরোজপুর জেলা শহর থেকে অটোরিক্সা যোগে যাওয়া যায় (৩০ /- ভাড়া ) ।