সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ
বাংলার ঐতিহ্যবাহী ষাট গম্বুজ মসজিদ( shat gombuj mosjid )অতি সুপরিচিত একটি মসজিদ যা আমাদের দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী স্থান। মসজিদটি ৬০ টি ছোট বড় গম্বুজ আকৃতির ছাদের জন্য বিখ্যাত এবং এটির নামকরণও এখান থেকেই হয়েছে। এই মসজিদটির আছে বিশাল ঐতিহ্য এবং অনেক সমৃদ্ধ ইতিহাস।মসজিদটির গায়ে কোনো শিলালিপি নেই। তাই এটি কে নির্মাণ করেছিলেন বা কোন সময়ে নির্মাণ করা হয়েছিল সে সম্বন্ধে সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। তবে মসজিদটির স্থাপত্যশৈলী দেখলে খান-ই-জাহান আলীই নির্মাণ করেছিলেন সে সম্বন্ধে কোনো সন্দেহ থাকে না। ধারণা করা হয় তিনি ১৪৪০ শতাব্দীতে এটি নির্মাণ করা করেছেন।
এ মসজিদটি বহু বছর ধরে ও বহু অর্থ খরচ করে নির্মাণ করা হয়েছিল। পাথরগুলো আনা হয়েছিল রাজমহল থেকে। এটি বাংলাদেশের তিনটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের একটির মধ্যে অবস্থিত, খুলনা বিভাগের বাগেরহাট শহরটিকেই বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দে ইউনেস্কো এই সম্মান প্রদান করে। বাগেরহাট জেলায় এই মসজিদটি অবস্থিত। বেশ অনেকগুলো মুসলিম স্থাপনা রয়েছে এই শহরে, তার মাঝে ষাট গম্বুজ মসজিদ বেশি পরিচিতি লাভ করেছে। ইতিহাসের পাতায় একে বর্ণনা করা হয়েছে ঐতিহাসিক মসজিদ যা মুসলিম বাংলার স্বর্ণযুগের প্রতিনিধিত্ব করে। মসজিদটিতে ৬০ টি পিলার আছে যা ৭৭ টি গম্বুজ ধারণ করে।
সে থেকেই এটার নামকরণ হয়েছে। খান জাহান আলি । এটি প্রার্থনা, সম্মেলন কেন্দ্র এবং মাদ্রাসা (ইসলামিক বিদ্যালয়) হিসেবে ব্যবহার হত। ৭৭টি গম্বুজ ছাদের উপর অবস্থিত এবং চারটি ছোট গম্বুজ মসজিদের চার কোণার মিনারে তথা টাওয়ারে অবস্থিত। মসজিদের পূর্ব দেয়ালে ১১টি বিরাট আকারের খিলান যুক্ত দরজা আছে। মাঝের দরজাটি অন্যগুলোর চেয়ে বড়। উত্তর ও দক্ষিণ দেয়ালে আছে ৭টি করে দরজা। মসজিদের চার কোণায় ৪টি মিনার আছে। এগুলোর নকশা গোলাকার এবং উপরের দিকে সরু হয়ে গেছে। নির্মাণ সামগ্রী হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে টালি ইট, চুন-সুড়কি, টেরাকোটা মাটির ফলক।
কিভাবে যাবেনঃ
ঢাকার সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে ১০টা এবং সন্ধা ৭ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত মেঘনা, বনফূল, ফাল্গুনী, আরা, পর্যটক, বলেশ্বর, হামিম ও দোলা পরিবহণের বেশ কিছু বাস ছেড়ে যায়। গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে সোহাগ, শাকুরা, হানিফ ও ইগল পরিবহণের গাড়ি ছাড়ে। এই বাসগুলোতে জনপ্রতি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা ভাড়া লাগে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলা বাগেরহাট শহর থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটার দূরে খুলনা-বাগেরহাট মহাসড়ক লাগোয়া সুন্দরঘোনা গ্রামে অবস্থিত ষাটগম্বুজ মসজিদটি। বাগেরহাট বাসস্ট্যান্ড থেকে ষাট গম্বুজ মসজিদ সাত কিলোমিটার। রিকশাভাড়া ৩০ টাকা। আন্তঃনগর ট্রেন সুন্দরবন এক্সপ্রেসে খুলনা গিয়ে এরপর বাস ধরে বাগেরহাটে যেতে পারেন। রূপসা থেকে বাগেরহাটে যেতে প্রায় ৪০ মিনিট লাগে।
এছাড়া ঢাকা থেকে খুলনাগামী আন্তঃনগর ট্রেন সুন্দরবন এক্সপ্রেসে খুলনা এসে সেখান থেকে বাসে বা সিএনজি তে করে করে ষাট গম্বুজ মসজিদ যেতে পারবেন। খুলনা থেকে সময় লাগবে এক থেকে দেড় ঘন্টার মত।
কোথায় থাকবেনঃ
রাত কাটানোর জন্য বাগেরহাটে রয়েছে বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল। তাদের মধ্যে সাগরিকা, রহমত হোটেল, মোহনা হোটেল, রাহাত হোটেল উল্লেখযোগ্য।
এখানে বেড়ানোর সময় যে সমস্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা খেয়াল রাখতে হবেঃ
এখানে বেড়ানোর ক্ষেত্রে দিনে দিনে ঘুরে ফিরে আসা উত্তম। ভ্রমনের সময় নিজ জিনিসপত্রের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে।
টিকেট প্রাপ্তিস্থানঃ
জনপ্রতি টিকেট বিশ টাকা। পাঁচ বছরের নিচে শিশুর জন্য প্রবেশ ফ্রি। বিদেশি দর্শনার্থীর জন্যে টিকেট মূল্য দুইশত টাকা করে। এখানে বেড়ানোর সময় যে সমস্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা খেয়াল রাখতে হবে। এখানে বেড়ানোর ক্ষেত্রে দিনে দিনে ঘুরে ফিরে আসা উত্তম। ভ্রমনের সময় নিজ জিনিসপত্রের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে।