সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ
নাগরিক কোলাহল থেকে মুক্ত, প্রকৃতির নির্জনতা, চারদিকে সবুজ গাছপালা, মাঝে মাঝে পাখ-পাখালির ডাক আর শীতল বাতাস( chandranath pahar )। এই রোমাঞ্চকর অনুভূতি আপনাকে দেবে এক পাহাড়সম প্রশান্তি। হ্যাঁ, বলছি সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ের কথা। আপনি যদি দুর্গম পাহাড়ি পথে হাঁটতে পছন্দ করেন, তবে চন্দ্রনাথ পাহাড় ঘুরে আসুন ছুটির দিনগুলোকে রোমাঞ্চকর করতে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান হিসেবে খ্যাত চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড। শুধু তাই-ই নয় এই স্থানটি বর্তমানে পর্যটকদের আকর্ষণেও অনেকটা শীর্ষে। বিশেষত সীতাকুণ্ডের অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যেকোনো ভ্রমণকারীকে মোহিত করে। আর সে রকম সীতাকুণ্ডের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি পর্যটনকেন্দ্র হলো চন্দ্রনাথ পাহাড়।
চন্দ্রনাথ পাহাড় এর অবস্থান সীতাকুণ্ড বাজার থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার পূর্ব দিকে। চন্দ্রনাথ পাহাড় মীরসরাই রেঞ্জ এর একটি পাহাড় আর এই চন্দ্রনাথ পাহাড়ের উপর অবস্থিত চন্দ্রনাথ মন্দির। এই পাহাড়ের সর্বোচ্চ চূড়ায় চন্দ্রনাথ মন্দির অবস্থিত। এর পাশাপাশি আরো অনেক মন্দির আছে এই এলাকায়। জনশ্রুতি রয়েছে যে, নেপালের এক রাজা ঘুমের মধ্যে পৃথিবীর পাঁচ স্থানে শিবমন্দির স্থাপনের আদেশ পান। স্বপ্নে আদেশ পেয়ে নেপালের সেই রাজা পৃথিবীর পাঁচ স্থানে পাঁচটি শিবমন্দির স্থাপন করেন। এগুলো হলো- নেপালের পশুপতিনাথ, কাশিতে বিশ্বনাথ, পাকিস্তানে ভূতনাথ, মহেশখালীর আদিনাথ এবং সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ মন্দির।
আপনি পায়ে হেঁটে অথবা রিক্সায় চড়ে চন্দ্রনাথ পাহাড়ে যেতে পারেন। কিন্তু পায়ে হেঁটে ভ্রমণের মজাই আলাদা, কারণ চন্দ্রনাথ পাহাড় শ্রেণীভুক্ত ছোট পাহাড় গুলো ব্যাসকুণ্ড থেকে শুরু হয়েছে। এই পাহাড়ে যাবার পথে হিন্দুদের কিছু ধর্মীয় স্থাপনাও আপনার চোখে পরবে। এই এলাকা বিভিন্ন ধরনের গাছ, বুনফুল এবং গুল্মলতায় পরিপূর্ণ। এখানে আপনি পেয়ারা, সুঁপাড়ি, আম সহ বিভিন্ন ফলের বাগান দেখতে পাবেন।এখানে কিছু নৃতাত্বিক জনগোষ্ঠীর মানুষও বসবাস করে, যারা ত্রিপুরা নামে পরিচিত এবং এখানে তাদের কিছু গ্রামও আছে। আপনি যদি পাহাড়ের গভীরে যান তবে পাহাড়ের গায়ে ফসলের চাষ হচ্ছে দেখতে পাবেন, এ গুলোকে জুমক্ষেত বলে; গভীর পাহাড়ের ভেতরে আপনি বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা ফুলের বাগানও দেখতে পাবেন।
কিভাবে যাবেনঃ
সীতাকুণ্ড বাজার থেকে ৪ কি.মি. দূরে চন্দ্রনাথ পাহাড় অবস্থিত। এখানে পায়ে হেঁটে অথবা রিক্সায় চড়ে যাওয়া যাবে।
ঢাকা থেকে এস.আলম, সৌদিয়া, গ্রীনলাইন, সিল্ক লাইন, সোহাগ, বাগদাদ এক্সপ্রেস, ইউনিক প্রভূতির বাস সীতাকুণ্ডে থামে। চট্টগ্রাম থেকে বাসগুলো মাদারবাড়ী, কদমতলী বাসষ্টেশন থেকে ছাড়ে। তা ছাড়াও অলঙ্কার থেকে কিছু ছোট গাড়ী ছাড়ে (স্থানী ভাবে মেক্সী নামে পরিচিত)। সেগুলো করেও আসা যাবে।
এছাড়া ঢাকা থেকে আসা দ্রুতগামী ট্রেন “ঢাকা মেইল” সীতাকুণ্ডে থামে, এটি ঢাকা থেকে ছাড়ে রাত ১১টায় এবং সীতাকুণ্ডে পৌঁছে পরদিন সকাল ৬.৩০ থেকে ৭টায়। অন্যান্য আন্তঃ নগর ট্রেন গুলো সরাসরি চট্টগ্রামে চলে যায়। শুধুমাত্র শিবর্তুদশী মেলার সময় সীতাকুণ্ডে থামে।
চট্টগ্রাম শহর থেকে পারিবারিক ভাবে সিএনজি অটো রিক্সাতে করে ঘুরে আসা যাবে। পাবলিক বাসে যেতে চাইলে নগরির অলংকার কিংবা এ কে খান মোড় থেকে বাসে উঠতে হবে, ভাড়া ২০ টাকা প্রতি জন।
কি খাবেনঃ
ব্যাসকুণ্ডের পাশে বিশাল মাঠ আছে। গাড়ী রাখা, রান্না করাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। খাবার, পানির সুব্যবস্থা নেই। নিজ উদ্যোগে সংগ্রহ করতে হয়।