বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট

সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ

পাকিস্তান চা বোর্ড, ১৯৫২ সালে পূর্ব পাকিস্তানে একটি চা গবেষণা ষ্টেশন প্রতিষ্ঠা করে( bangladesh tea research institute )। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ সরকার ষ্টেশনটিকে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে উন্নীত করে।ভারতের আসামের পরেই উপমহাদেশের সবচেয়ে পুরাতন চা গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে শ্রীমঙ্গলে। যা দেখতে প্রচুর পর্যটক আসে।

বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটটি বাংলাদেশ ন্যাশনাল এগ্রিকালচার্যােল রিসার্চ সিস্টেম (নার্স)-এর অন্তর্ভূক্ত ১০টি জাতীয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম। এ প্রতিষ্ঠানের সারাদেশে ৪টি উপকেন্দ্র রয়েছে। উপকেন্দ্রগুলোর

১টি মৌলভীবাজার জেলার কালিটিতে,

১টি সিলেট শহরে,

১টি চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়িতে এবং সর্বশেষ ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত

১টি উত্তরবঙ্গের পঞ্চগড় জেলার তেতুলিয়ায় অবস্থিত।

বিটিআরআই-এর ৮টি গবেষণা বিভাগ রয়েছে। গবেষণা বিভাগগুলো হচ্ছেঃ- ১. মৃত্তিকা রসায়ন, ২. উদ্ভিদ বিজ্ঞান, ৩. কৃষিতত্ত্ব, ৪. কীটতত্ত্ব, ৫. উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব, ৬. প্রাণ রসায়ন, ৭. প্রকৌশল, ৮. পরিসংখ্যান ও অর্থনীতি। এ প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের অন্যান্য চা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সমতুল্য।

বিটিআরআই-এর চা বিজ্ঞানীদের উদ্‌ভাবিত প্রযুক্তি ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা-জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা চা শিল্পের অগ্রগতি ও উন্নয়নে অবদান রেখে যাচ্ছে। চা বিজ্ঞানীরা এ পর্যন্ত বিটি-১ থেকে বিটি-১৬ পর্যন্ত ১৬টি উচ্চ ফলনশীল ও আকর্ষনীয় গুণগতমান সম্পন্ন ক্লোন উদ্‌ভাবন করেছেন। চা বিজ্ঞানীরা সর্বশেষ অধিক ফলনশীল উন্নতজাতের ক্লোন ‘বিটি-১৬’ আনুষ্ঠানিকভাবে বিমুক্ত করেছেন। এছাড়া চা বিজ্ঞানীরা নিরলস গবেষণা চালিয়ে উদ্ভাবন করেছেন কয়েকটি জেনারেটিভ ক্লোন সমন্বয়ে ৪টি বাইক্লোনাল বীজজাত বিটিএস-১, বিটিএস-২, বিটিএস-৩, বিটিএস-৪সহ একটি পার্লক্লোনাল বীজজাত।

সিলেট অঞ্চলের বিখ্যাত সাতকড়া আচার কিংবা মাছ-মাংসের সঙ্গে এ অঞ্চলে খুবই জনপ্রিয়। সুস্বাদু এ লেবুজাতীয় ফল দিয়ে এবার তৈরি হচ্ছে চা। এরইমধ্যে গবেষকরা সিলেটের এ জনপ্রিয় ফলকে দেশব্যাপী জনপ্রিয় করে তুলতে তৈরি করেছেন ‘সাতকড়া চা’। চায়ের রং হবে অনেকটা কমলা। চা পাতার সঙ্গে সাতকড়ার সংমিশ্রণে তৈরি এ চা। বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই) শ্রীমঙ্গলের জেনারেল ম্যানেজার খোন্দকার শাহজাহান নিজেই উদ্ভাবন করেছেন নতুন এ চা। তিনি সাতকড়ার চা ছাড়াও ‘সিলভার চা’ তৈরি করেছেন। তিনি বলেন,সাতকড়া বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের জনপ্রিয় লেবুজাতীয় ফল। মানুষের জনপ্রিয়তার কথা চিন্তা করে এ ফল থেকে চা তৈরির জন্য তিনমাস যাবত চেষ্টা করে সফল হয়েছি।

সাতকড়া চায়ের লেভেলও তৈরি হয়ে গেছে। এর ব্র্যান্ডিং নাম হবে সাতকড়া চা, বাংলাদেশের চা। এরই মধ্যে তিনি সিলভার চা ছাড়াও অর্থডক্স (আদি চা) তৈরি করেছেন। যে চা অর্ধশত বছর আগে তৈরি করা হতো। এ চায়ের বৈশিষ্ট্য হল- লিকার হালকা, ফ্লেভার বেশি। এছাড়াও ডায়বেটিক চা তৈরিরও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

বাংলাদেশের চা গবেষণা কেন্দ্রটি পড়েছে শ্রীমঙ্গলের মূল শহর থেকে মাত্র ২ কিলো দূরে । কিন্তু শ্রীমঙ্গল পৌরসভার অন্তর্ভূক্ত । সংস্থাটিকে সংক্ষেপে সবাই বিটিআরআই বলে জানেন। শহর থেকে ১০ থেখে ১৫ টাকা রিকশা ভাড়া দিয়ে সহজেই বিটিআরআই পৌছে যেতে পারেন ।   বিটিআরআই ক্যাম্পাসেই রয়েছে বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রকল্প উন্নয়ন অফিস । অফিস গেটে রিকশা থেকে নামামাত্রই চোখে পড়বে হরেক রকম ফুলের সমাহারে ভরা ২টি ফুল বাগান , একটি বিটিআরআইু এর অপরটি চা বোর্ডের। গেটে অনুমতি নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করুন , ভিতরে দেখতে পাবেন ৫০/৬০ বছরের পুরোনো চা গাছ । চা ম্যানুফকচারিংসহ টি টেস্টিং ল্যাব , গবেষণা ফ্যাক্টরিসহ বাংলাদেশর একমাত্র ভেষজ উদ্ভিদের বাগান।

আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে বা এই বিষয়ে কোন কিছু জানানোর থাকলে নীচের মন্তব্য বিভাগে লিখতে ভুলবেন না । আপনার ভ্রমণ পিয়াশি বন্ধুদের সাথে নিবন্ধটি শেয়ার করে নিন যাতে তারাও জানতে পারে ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *