কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত | পটুয়াখালী

0
471

বিবরনঃ

কুয়াকাটা( kuakata sea beach patuakhali ) বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি সমুদ্র সৈকত ও পর্যটনকেন্দ্র। পর্যটকদের কাছে কুয়াকাটা “সাগর কন্যা” হিসেবে পরিচিত। ১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সৈকত বিশিষ্ট কুয়াকাটা বাংলাদেশের অন্যতম নৈসর্গিক সমুদ্র সৈকত। এটি বাংলাদেশের একমাত্র সৈকত যেখান থেকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দুটোই দেখা যায়।পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর থানার লতাচাপলী ইউনিয়নে কুয়াকাটা অবস্থিত। ঢাকা থেকে সড়কপথে এর দূরত্ব ৩৮০ কিলোমিটার, বরিশাল থেকে ১০৮ কিলোমিটার।২০১১ এর আদমশুমারি অনুযায়ী কুয়াকাটার মোট জনসংখ্যা ৯,০৭৭ জন এবং পরিবার সংখ্যা ২,০৬৫ টি।

কিভাবে যাবঃ
কুয়াকাটা দুই পথে যেতে পারেন। নৌপথ আর সড়কপথ। নৌপথে যেতে হলে প্রথমেই আপনাকে যেতে হবে ঢাকা সদর ঘাট। সেখান থেকে প্রতিদিন পটুয়াখালীর উদ্দেশে যাত্রা করে ৪টি অত্যাধুনিক লঞ্চ। তবে লঞ্চে যেতে চাইলে অন্তত একদিন আগেই লঞ্চের টিকিত কেটে রাখা ভালো। সিঙ্গেল কেবিন ভাড়া লঞ্চ ভেদে ১২০০ থেকে ২০০০ টাকা। এ ছাড়াও আছে লঞ্চের ডেক, যার ভাড়া আরো কম। আপনি চাইলে লঞ্চেই রাতের খাবার অর্ডার করতে পারেন অথবা নিজের বাসা থেকে নিয়ে যেতে পারেন। লঞ্চের ভ্রমণ খুবই উপভোগ্য। লঞ্চে প্রথম ভ্রমণ হলে আপনি আপ্লুত হয়ে পড়বেন। বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার ভেতর লঞ্চ ঢাকা থেকে ছেড়ে যায়।

সকাল ৬টা বা ৭ টা নাগাদ পটুয়াখালী পৌঁছুবেন। সকাল ৬টা থেকেই প্রতি ১ ঘণ্টা পরপর কুয়াকাটার বাস ছেড়ে যায় পটুয়াখালী বাস স্ট্যান্ড থেকে। লঞ্চ ঘাট থেকে বাস স্ট্যান্ড এর ভাড়া ২৫-৩০ টাকা। সড়কপথে যেতে হলে আপনাকে যেতে হবে গাবতলী বাস স্ট্যান্ড। এসি, নন-এসি দুই ধরনের বাস সার্ভিসই পাবেন। নন এসি বাস ভাড়া ১০০০ থেকে ২০০০ টাকা। সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ৪টা বাস ছেড়ে যায় ঢাকা থেকে। আর নাইট কোচ এর সময় শুরু সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত। আর গাবতলী থেকে দুই একটা বাস সরাসরি কুয়াকাটার উদ্দেশে ছেড়ে যায় তবে সেগুলোর সার্ভিস তেমন ভাল নয়।

সড়ক পথে রাস্তার অবস্থা খুবই ভাল। পটুয়াখালী থেকে কুয়াকাটার ভাড়া জন প্রতি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। সন্ধ্যা ৫টার পর আর কোনো বাস পটুয়াখালী থেকে কুয়াকাটা যায় না।

কি খাবেনঃ
খাবারের জন্য কুয়াকাটাতে অনেক রেস্তোরাঁ রয়েছে, তবে অর্ডার দেওয়ার আগে অবশ্যই দামটা জেনে নেবেন।

কোথায় থাকবেনঃ
কুয়াকাটা থাকার জন্য অনেক হোটেল রয়েছে। ৩ স্টার মানের হোটেল আছে দুটো। তাছাড়া আছে সরকারি ডাকবাংলো। এ ছাড়া মাঝারি মানের অনেক ভাল হোটেল রয়েছে। সিঙ্গেল বেড এর ভাড়া এইসব হোটেল ৩০০ টাকা থেকে শুরু। আর ৬-৭ জন থাকার জন্য ৪ বেডের রুম নিতে পারেন যার ভাড়া পড়বে ৮০০-১৫০০ টাকার মত। সব হোটেল গুলোই সৈকতের কাছে।

দেখার মত কি কি যায়গা আছেঃ

ফাতরার বন – সমুদ্রসৈকতের পশ্চিম দিকের সংরক্ষিত ম্যানগ্রোভ বন, যা ‘দ্বিতীয় সুন্দরবন’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে; কুয়াটারা ‘কুয়া’ – কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের কাছে রাখাইন পল্লী কেরানীপাড়ার শুরুতেই একটা বৌদ্ধ মন্দিরের কাছে রয়েছে একটি প্রাচীন কুপ;সীমা বৌদ্ধ মন্দির – প্রাচীন কুয়াটির সামনেই রয়েছে প্রাচীন সীমা বৌদ্ধ মন্দির, যাতে রয়েছে প্রায় সাঁইত্রিশ মন ওজনের অষ্ট ধাতুর তৈরি ধ্যানমগ্ন বুদ্ধের মূর্তি;কেরানিপাড়া – সীমা বৌদ্ধ মন্দিরের সামনে থেকেই শুরু হয়েছে রাখাইন আদিবাসীদের পল্লী কেরানিপাড়া আলীপুর বন্দর – কুয়াকাটা থেকে প্রায় চার কিলোমিটার উত্তরে রয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বড় মৎস্য ব্যবসা কেন্দ্র আলীপুর;

মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধ মন্দির – কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে প্রায় আট কিলোমিটার পূর্বে রাখাইন আদিবাসীদের আবাস্থল মিশ্রিপাড়ায় রয়েছে একটি বৌদ্ধ মন্দির, যাতে রয়েছে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় বৌদ্ধ মূর্তি;গঙ্গামতির জঙ্গল – কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের পূব দিকে গঙ্গামতির খালের পাশে গঙ্গামতি বা গজমতির জঙ্গল।

আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে বা এই বিষয়ে কোন কিছু জানানোর থাকলে নীচের মন্তব্য বিভাগে লিখতে ভুলবেন না । আপনার ভ্রমণ পিয়াশি বন্ধুদের সাথে নিবন্ধটি শেয়ার করে নিন যাতে তারাও জানতে পারে ।