সংক্ষিপ্ত বিবরনঃ
রাজা টংকনাথের রাজবাড়ি ( Raja Tonkonaths Palace ) ১৯০০ খ্রিস্টাব্দের প্রথম দিকে মালদুয়ার পরগণার অন্তর্গত ছিলো । যা বর্তমানে বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা হতে ৪০ কিলোমিটার দূরে রাণীশংকৈল উপজেলায় অবস্থিত।
রাজা টংকনাথ এর পূর্ব-পুরুষদের কেউ জমিদার ছিলেন না । বর্তমানে রাণীশংকৈল উপজেলা সদর হতে ৭ কিমি পূর্বে কাতিহার নামক জায়গায় গোয়ালা বংশীয় নিঃসন্তান এক জমিদার বাস করতেন । উক্ত জমিদারের মন্দিরে সেবায়েত হিসাবে কাজ করতেন টংকনাথের পিতা বুদ্ধিনাথ । গোয়ালা জমিদার ভারত এর কাশি যাওয়ার সময় তাম্রপাতে দলিল করে যান যে, তিনি ফিরে না এলে মন্দিরের সেবায়েত বুদ্ধিনাথ জমিদারির মালিক হবেন । গোয়ালা জমিদার ফিরে না আসায় বুদ্ধিনাথ জমিদারির মালিক হন । তবে অনেকে মনে করেন এই ঘটনা বুদ্ধিনাথ দু-এক পুরুষ পূর্বেরও হতে পারে। জমিদার বুদ্ধিনাথের দ্বিতীয় ছেলে টংকনাথ তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের আস্থা অর্জন করার জন্য মালদুয়ার স্টেট গঠন করেন । বিভিন্ন সময় সমাজ সেবা মূলক কাজের জন্য ১৯২৫ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার টংকনাথকে চৌধুরী উপাধিতে ভূষিত করেন। পরবর্তীতে দিনাজপুরের মহারাজা গিরিজনাথ রায়ের বশ্যতা স্বীকার করে রাজা উপাধি পান।
পরে রাজা টংকনাথের স্ত্রী রাণী শংকরী দেবীর নামানুসারে মালদুয়ার স্টেটের নাম করণ করা হয় রাণীশংকৈল। দেশভাগের প্রাক্কালে রাজা জমিদারি ছেড়ে ভারতে পাড়ি জমান । এর মধ্য দিয়ে মালদুয়ার স্টেট রাজা টংকনাথ চৌধুরীর জমিদারি পরম্পরার সমাপ্তি ঘটে।
বর্তমান রাণীশংকৈল উপজেলা সদর হতে ১.৩ কিমি পূর্বে কুলিক নদীর তীরে প্রায় ১০ একর জমির উপর রাজবাড়িটি অবস্থিত । বিশাল এক সিংহ দরজা দিয়ে রাজবাড়ির ভিতরে প্রবেশ করতে হয় । লাল রংয়ের দালানটি স্থাপত্যশৈলীতে আধুনিকতার পাশাপাশি ভিক্টোরিয়ান অলঙ্করণের ছাপ সুস্পষ্ট । রাজবাড়ি সংলগ্ন উত্তর-পূর্ব কোণে কাছারি বাড়ি, পূর্বে দুইটি পুকুর এবং রাজবাড়ি থেকে ২০০ মিটার দক্ষিণে রামচন্দ্র (জয়কালী) মন্দির অবস্থিত ।
বর্তমানে রাজবাড়ি ও তৎসংলগ্ন সব স্থাপনা অবহেলিত ও পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে।
কিভাবে যাবেনঃ
রাণীশংকৈল বাসস্ট্যান্ড হতে ভ্যান যোগে/ মোটরসাইকেল যোগে যাওয়া যায়। বাচোর ইউনিয়ন পরিষদের পুরাতন ভবন এর পাশে।
কোথায় থাকবেনঃ
ঠাকুরগাঁওয়ে রয়েছে বেশ কিছু ডাকবাংলো ও রেস্টহাউজ। সেখানে রাত্রিযাপন করতে পারবেন। এছাড়া বিভিন্ন আবাসিক হোটেল রয়েছে। যেমন, সালাম ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল সাদেক, প্রাইম ইন্টারন্যশনাল ইত্যাদি।