Heritage Park Khagrachari

হেরিটেজ পার্ক | খাগড়াছড়ি

সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ

সবুজ পাহাড়ের বুকে নৈসর্গিক শোভা মন্ডিত শহর খাগড়াছড়ি’র পরিত্যাক্ত এক পাহাড়ে প্রকৃতির সাথে সঙ্গতি রেখে গড়ে তোলা হয়েছে ভ্রমন স্পট হেরিটেজ পার্ক( Heritage Park Khagrachari )। দূর পাহাড়ের কোল ঘেষে সর্পিল প্রবাহ নিয়ে বয়ে যাওয়া চেঙ্গী নদীর পারে জেলা আনসার ও ভিডিপি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উঁচু পাহাড়ে অবস্থিত এই পার্ক।

এখানে প্রকৃতির মাঝে নিজেকে উজার করে দিয়ে সময় কাটায় প্রকৃতি প্রেমিকরা। তাদের হৃদয় ও মন ছুঁয়ে যায় এ স্থানটির নৈসর্গিক রূপ-লাবন্যে। একের পর এক তিলত্তোমায় ভিন্ন সাজে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে খাগড়াছড়ির বহুল আলোচিত হেরিটেজ পার্কটিকে। প্রতিটি পরতে পরতে লেগেছে নান্দনিকতার ছাপ। তাই এক সময়ের অবহেলিত পরিত্যাক্ত এই পাহাড়ে এখন প্রতিনিয়তই বসে পাহাড়ি-বাঙালির মিলন মেলা।

হেরিটেজ পার্কে নতুনভাবে স্থাপিত হয়েছে ছোট্ট একটি জাদুঘর। যেখানে নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর বৈচিত্রময় জীবনধারা সাজানো আছে । এখানে মারমা, ত্রিপুরা, চাকমাসহ সকল উপজাতিদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র ও বসত ঘর তৈরি করে প্রকৃতির সাথে আধুনিকতার প্রলেপ দিয়ে সাজানো হয়েছে। যা দেশী বিদেশী পর্যটকদের জন্য নতুন মাত্রা এনে দিয়েছে। তার উপর তাঁবু ও বাসের বিচানায় মধ্যে রাত্রী যাপনের বিশেষ সুযোগ পেতে এখানে আসলে নিজেকে যুদ্ধের মাঠে অগ্র সৈনিক মনে হবে।এখানকার প্রকৃতি সময়ের সাথে রঙ বদলায়।

সকাল, দুপুর, বিকেল, সন্ধ্যা ও রাতে বসে রঙের মেলা। পাহাড় ঘেরা এ প্রকৃতিতে বসে চাঁদনী রাতের দৃশ্যপট ভিন্ন মাত্রা এনে দেয়। এখানে বসে জেলার সর্বোচ্চ পাহাড় চূঁড়া আলুটিলা অপার দৃষ্টিতে একপলকে দেখে সেখানে পাখির মত ডানা মেলে উড়ে যেতে ইচ্ছে হবে। এই পাহাড় চূঁড়ায় বসে দূর পাহাড়ের বুক চিরে সকালের মিষ্টি সূর্যোদয়, সন্ধ্যায় সব আলোকে স্নান করা সূর্যাস্তের দৃশ্য সত্যি অপরূপ। নীল আকাশে সাদা মেঘ, সবুজ পাহাড়ের বাঁকে বাঁকে মেঘের ভেলা, চেঙ্গী নদীর লাল মাটির ঘোলা পানির টানে নিজেকে হারিয়ে যেতে নেই মানা। এখানকার গাঢ় সবুজ পাহাড়, কলকলে বয়ে যাওয়া নদী, দূরে ঝিরঝির শব্দের ঝর্ণা, উপরে নীল আকাশ, মাঝে মাঝে সাদা মেঘ, বর্ষায় বৃষ্টির রিমঝিম শব্দ, রাতের আকাশে চাদ-তারা ও দিনের আলোয় লাল সূর্য্য মিলেমিশে একাকার। হেরিটেজ পার্কের পেভিলিয়নে বসে দেখতে পাবেন চেঙ্গী নদী ও আরেক পর্যটন কেন্দ্র আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের সৌন্দর্য্য । এ কারণে কপোত-কপোতিদের ভীড় এখানে দিন দিন বাড়ছে।

এখানে গার্ডেন ভেলি রেস্টুরেন্টে ৬০প্রকারের সুস্বাদু খাবার, গিরীনন্দন সপিং, সংগীতের মুর্ছনায় হৃদয়ের সুকুমার বৃত্তগুলো পরিস্ফুটিত হয়। এখানকার পরিত্যাক্ত লাল মাটির জঙ্গলাকীর্ণ পাহাড়কে পরিকল্পিতভাবে কাজে লাগিয়ে হেরিটেজ পার্ক গড়ে তুলতে বাহারি রঙের ফুলের বাগান সৃজন করা হয়েছে। হেরিটেজ পার্কের ভেতর প্রবেশ কালে আঁকা-বাঁকা ও নিঁচু থেকে উঁচুতে ওঠার সময়ে ইট বিছানো পথের দু’ধারে সবুজ ঘাসের মাঝে রঙিন ফুলের দোল খেলার দৃশ্যপট যে কারও মনকে উত্ফুল্ল করে তোলে। তার ওপর পাহাড়টির নিচে সমতল ভূমিতে ফলজ-বনজ বাগান সৃজন করা হয়েছে। সেখানে বাউকূল, আপেলকূল, লিচু, আম, আনারস ইত্যাদি ফলের বাগান অনেকের জন্য বাড়তি উত্সাহ সৃষ্টি করে।

আনসার-ভিডিপির প্রশিণার্থীরা ফল চাষের প্রশিক্ষণ নিয়ে বাস্তবে তা দেখে তারা নতুন উদ্যমে বাগান সৃজনে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। প্রশিণ শেষে শুধু নিজেরাই নয়, অন্যদেরও তারা ফলজ-বনজ বাগান সৃজনে উদ্বুদ্ধ করছেন। ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক উন্নয়নেও হেরিটেজ পার্ক ভূমিকা রাখছে। আনসার ও গ্রাম প্রতিরা বাহিনীর বহুবিধ কার্যক্রমের একটি হচ্ছে পলী অর্থনীতির গতি সঞ্চার করা। খাগড়াছড়িতে স্থাপিত হেরিটেজ পার্ক প্রকল্প তার একটি মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করছে। যেখানে পাহাড়ি-বাঙালি সকলের মিলন মেলায় সমপ্রীতির সেতূবন্ধন রচিত হয়েছে।

কিভাবে যাবেনঃ
জেলা সদর থেকে রিক্সা, অটো-রিক্সা যোগে যাওয়া যায়।

আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে বা এই বিষয়ে কোন কিছু জানানোর থাকলে নীচের মন্তব্য বিভাগে লিখতে ভুলবেন না । আপনার ভ্রমণ পিয়াশি বন্ধুদের সাথে নিবন্ধটি শেয়ার করে নিন যাতে তারাও জানতে পারে ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *