সংক্ষিপ্ত বিবরনঃ
মন যখন পথিক, গন্তব্য তখন হুটহাট যখন তখন যেখানে সেখানে। আর সেই গন্তব্য শুধু চোখের শান্তি খোঁজে না, খোঁজে স্বাদের শান্তিও! পদ্মার ইলিশ খেতে মাওয়া ফেরিঘাটে( Mawa Ferry Ghat )তাই ভোজনরসিক ভ্রমণকারীদের ভিড় হয় প্রায়ই। ইলিশের বিশেষ মৌসুম, অর্থাৎ ইলিশ ধরা যে সময় নিষিদ্ধ সেই সময় ছাড়া সারা বছরই এখানে ইলিশ পাওয়া যায়।
পেটপুরে খাওয়ার পাশাপাশি ঘুরে বেড়াতে পারেন পদ্মায়। স্পীড বোটে চলে যেতে পারেন নদীর ওপারে। ওপারে যেতে ২০-২৫ মিনিটের মতো লাগে; ভাড়া ১৫০ টাকা। লঞ্চেও যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে ভাড়া অনেক কম আর সময় বেশি। দেখতে পারেন নদীতে সূর্যের আলোর খেলা। তবে সাঁতার না জানলে নদীতে নামা থেকে বিরত থাকুন।
মাওয়া ঘাটের হোটেল থেকে ইলিশ না খেয়ে নিজে কিনে তারপর খেতে চাইলে সে ব্যবস্থাও আছে। তবে যেতে হবে একটু সকাল সকাল। জেলেদের কাছ থেকে নিজে দেখে কিনবেন! হোটেলে রান্না করে দেবে। হাতে সময় থাকলে কাছের লৌহজং এ চলে যেতে পারেন। সেখান থেকে নৌকায় ঘুরে আসতে পারেন পদ্মা রিসোর্ট। রিসোর্টে রাতে থাকার ব্যবস্থা আছে, তবে না থাকতে চাইলে মাত্র ৫০ টাকা প্রবেশ মূল্য দিয়ে শুধু ঘুরে আসতে পারবেন।
অনেকে পূর্নিমা দেখার জন্যেও বেছে নেন জায়গাটি। মোটেও নিরিবিলি নয়, লোকে লোকারণ্য থাকে এলাকাটি, তাই নিরাপত্তার ভয় নেই। সারারাত আড্ডা আর হোটেলে খাওয়া-দাওয়া করে ভোরে ফিরে আসতে পারেন।
কিভাবে যাবেনঃ
ঢাকার যেকোন স্থান থেকে যাত্রাবাড়ী পোঁছে ফুটওভার ব্রীজের দক্ষিণ দিকের পোস্তাগোলাগামী রাস্তা দিয়ে একটু সামনে গেলেই পাওয়া যাবে মাওয়া বাসষ্ট্যান্ড। এখান থেকে প্রতি ৫ থেকে ১০ মিনিট অন্তর অন্তর বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানির বাস ছেড়ে যায় মাওয়ার উদ্দেশ্যে। আনন্দ, ইঁলিশ, গুন-গুন ইত্যাদি পরিবহনে মাওয়া যেতে বাস ভাড়া লাগবে কম-বেশী ৫০ টাকা । ৫০ টাকার বিনিময়ে প্রায় ৩৫ কি.মি. পারি দিয়ে মাওয়া ফেরী ঘাটে পৌছতে সময় লাগবে ঘন্টাখানেক। নিশ্চিন্তে চড়ে বসুন যে কোন একটা বাসে। ইচ্ছে করলে সকাল কিংবা দুপুরে রওনা হয়ে বিকেলটা মাওয়ার পদ্মা পাড়ে কাটিয়ে সন্ধ্যার পরপরই ফিরে আসা যায় ঢাকাতে। যাত্রাবাড়ি ছাড়া গুলিস্থান থেকেও মাওয়ার সরাসরি বাস পাওয়া যায়। এখান থেকে ভাড়া একই পরিমান লাগলেও সময় একটু বেশী লাগে।
দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যার আগে পর্যন্ত নদীতে থাকবে সূর্যের রূপালী ঝিলিক। মৃদু বাতাসে নদীর জলে ছোট ছোট রূপালী ঢেউ ঝলকে দেয় চোখ। পদ্মায় ভেসে ঘোরার মতো মাঝি ও নৌকা দুর্লভ। এপার হতে ওপারে যাওয়ার জন্য আছে লঞ্চ আর স্পীড-বোট। ফেরীতেও পারাপার হতে পারেন। স্পীড বোটে এপার হতে ওপারে যেতে ২০-২৫ মিনিটের মতো লাগে; ভাড়া ১৫০ টাকা। যারা একটু ভীতু এবং সাঁতার জানেন না, তাদের স্পীড-বোটে না চরাই ভালো; দ্রুতগতির এই স্পীড-বোট পদ্মার বুকে অনেক সময় লাফিয়ে লাফিয়ে চলে যা রোমাঞ্চকর এবং মজাদার বটে, কিন্তু ভয় পেলে তাতে না চড়াই ভালো। লঞ্চ পারাপারে সময় একটু বেশী লাগে, আশেপাশের প্রকৃতিও দেখা যায় বেশী। ভাড়া ৩০ টাকা (লোকাল) এবং ৪০ টাকা।
পদ্মা ভ্রমণের আরো একটা আকর্ষণ হচ্ছে পদ্মার ইলিশ। যদিও হোটেলে পরিবেশ ততটা পরিষ্কার নয়, তবুও এর স্বাদ অন্য সব জায়গা থেকে অন্যতম।