সংক্ষিপ্ত বিবরনঃ
( Mawa Resort )শহরের বদ্ধ পরিবেশ থেকে বেরিয়ে খোলা প্রাণে নিশ্বাস নিতে আমাদের মন হাঁপিয়ে উঠে। কিছুদিন প্রাকৃতিক পরিবেশে আনন্দময় অবকাশ যাপন এই যান্ত্রিক জীবনের অবসাদ নিমিষেই উড়িয়ে দেয়। দূরে কোথাও থেকে ঘুরে আসবেন কিন্তু এতো সময় কোথায়!আর তাই এই বিষয়কে মাথায় রেখে ঢাকার অদূরেই অবকাশ যাপনের জন্য গড়ে উঠেছে চমৎকার সব রিসোর্ট। নিরিবিলি ছুটি কাটানোর জন্য এসকল রিসোর্টের জুরি নেই । আর তা যদি হয় প্রকৃতিঘেরা অনিন্দ্য সুন্দর কোনো রিসোর্ট তবে তো কথাই নেই। এমনই এক প্রকৃতির ছায়ায় ঘেরা পদ্মা পাড়ের রিসোর্ট মাওয়া রিসোর্ট। বহমান পদ্মা নদীর নৈসর্গিক সৌন্দর্য দিয়ে ঘেরা এই রিসোর্টে আপনি কাটাতে পারবেন প্রশান্তিময় কিছু সময়।
ঢাকা থেকে মাত্র ৩৮ কিলোমিটার দূরে মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলার কান্দিপাড়া গ্রামে পদ্মার পাড়ে মাওয়া রিসোর্ট এর অবস্থান। ছিমছাম প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়ে উঠা এই রিসোর্টটির সামনেই প্রমত্তা নদী পদ্মা। রিসোর্টটির পরিবেশ যেমন শান্ত তেমনি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর নিরিবিলি এলাকা। নির্জনতার বাতাবরণ আর সবুজে ঘেরা চারপাশ আপনাকে এক স্নিগ্ধ প্রশান্তিতে ডুবিয়ে ফেলবে। এখানে আপনি ইচ্ছেমতো নদীতে সাঁতার কাটতে পারবেন, আরো পারবেন প্রাণভরে নৌকায় চড়ে ঘুরতে। এই সব ধরণের বিনোদনের ব্যবস্থাই রিসোর্টটি করে রেখেছে। এই রিসোর্টটি বিভিন্ন জাতের গাছ-গাছালিতে ভরপুর। সেই সাথে গাছে গাছে ঝুলছে ফল। ইচ্ছে করলে আপনিও হাত দিয়ে পেড়ে খেতে পারবেন যেকোন ফল।
সবুজে ঘেরা রিসোর্টটির প্রধান ফটক দিয়ে ঢুকতেই নজরে পড়ে বিশাল এক দীঘি । দীঘির চারদিকে সারি সারি নারিকেল আর সুপারি গাছ রিসোর্টটির সৌন্দর্যে যোগ করেছে অনন্য মাত্রা। এই দীঘিতে রয়েছে দুটি বাঁধানো পাকা ঘাট। ঘাটে চুপচাপ বসে উপভোগ করতে পারেন চারপাশের সৌন্দর্য নতুবা চাইলে বোটে করে দীঘির শান্ত জলে ঘুরে বেড়াতে পারেন। দীঘির পাড়ে রয়েছে একটি ক্যাফেটেরিয়া। পর্যটকদের পছন্দমতো খাবার পাওয়া যায় এখানে। এই ক্যাফেটেরিয়াতে পাবেন তাজা ইলিশের স্বাদ যা আপনার রসনা বিলাসে পরিপূর্ণ তৃপ্তি দিবে।
মাওয়া রিসোর্টে পর্যটকদের থাকার জন্য রয়েছে সারি সারি বেশ কয়েকটি কটেজ। এখানে মোট ১১টি কটেজ রয়েছে। ৫টি সিঙ্গেল, ৪টি ডাবল ও একটি সুইট রয়েছে এখানে। আপনার প্রয়োজন ও সামর্থ্য অনুযায়ী যেকোনটি বেছে নিতে পারেন। কটেজে যাবার সময় দেখতে পাবেন সাদা আর সবুজ রঙের কাঠের পুল। যা এই রিসোর্টটির সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। পিকনিক ও ছবির শুটিং করার জন্য এটি একটি চমৎকার স্থান। এখানকার কটেজগুলো ইটের দেয়ালে তৈরি করা হলেও এর ছাদগুলো তৈরি করা হয়েছে গোলপাতা দিয়ে। বাঁশের চটা দিয়ে নানান আলপনা তৈরি করা সিলিং আপনার মন কেড়ে নেবে। তাই কটেজগুলো দেখতেই আপনি অনুভব করবেন গ্রামীণ আদিমতার সৌন্দর্য। তবে ভেতরের আধুনিক আসবাবপত্র,
বাথরুম আর টাইলসের মেঝে দেখে মনে হবে আপনি বুঝি কোন ফাইভ স্টার হোটেলে আছেন। নির্জন পরিবেশে রাতে এই রিসোর্টে নেমে আসে নৈসর্গিক গ্রামীণ সৌন্দর্য আর নীরব প্রশান্তি। কটেজের জানালায় রাশি রাশি জোনাক পোকার খেলা আর তাদের ঝিঁ ঝিঁ শব্দ সেই কথাই জানান দেয়। এখানে রয়েছে কর্পোরেট পিকনিক ও মিটিংসহ সব ধরণের অনুষ্ঠান আয়োজনের ব্যবস্থা। যারা কটেজে রাতে ও দিনে থাকতে চান তাদের আগেই বুকিং দিয়ে কনফার্ম করে আসতে হবে। আর শুধু এমনিতে সারাদিন ঘুরে বেড়াতে চাইলে রিসোর্টের প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ৩০টাকা।