নিঝুম দ্বীপ | নোয়াখালী

সংক্ষিপ্ত বিবরনঃ

নিঝুম দ্বীপ( Nijhum Dwip ) বাংলাদেশের একটি ছোট্ট দ্বীপ । এটি নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার অন্তর্গত । ২০০১ সালের ৮ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকার পুরো দ্বীপটিকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করে । নিঝুম দ্বীপের পূর্ব নাম ছিলো চর-ওসমান। ওসমান নামের একজন বাথানিয়া তার মহিষের বাথান নিয়ে প্রথম নিঝুম দ্বীপে বসত গড়েন। তখন এই নামেই এর নামকরণ হয়েছিলো। পরে হাতিয়ার সাংসদ আমিরুল ইসলাম কালাম এই নাম বদলে নিঝুম দ্বীপ নামকরণ করেন। মূলত বল্লারচর, চর ওসমান, কামলার চর এবং চুর মুরি- এই চারটি চর মিলিয়ে নিঝুম দ্বীপ। প্রায় ১৪,০৫০ একরের দ্বীপটি ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের দিকে জেগে ওঠে। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দের আগ পর্যন্ত কোনো লোকবসতি ছিলো না, তাই দ্বীপটি নিঝুমই ছিলো।  বাংলাদেশের বনবিভাগ ৭০-এর দশকে বন বিভাগের কার্যক্রম শুরু করে। প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে চার জোড়া হরিণ ছাড়ে। নিঝুম দ্বীপ এখন হরিণের অভয়ারণ্য। ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দের হরিণশুমারি অনুযায়ী হরিণের সংখ্যা ২২,০০০। নোনা পানিতে বেষ্টিত নিঝুম দ্বীপ কেওড়াগাছের অভয়ারণ্য। ম্যানগ্রোভ বনের মধ্যে সুন্দরবনের পরে নিঝুম দ্বীপকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন বলে অনেকে দাবী করেন।

যা যা দেখবেনঃ

কমলার দ্বীপ। সেখানের কমলার খালে অনেক ইলিশ মাছ পাওয়া যায়। এছাড়াও আশে পাশের দ্বীপগুলো সুন্দর। পুরো দ্বীপটা হেঁটে হেঁটে ঘুরা যাবে।চৌধুরী খাল ও কবিরাজের চর । যেতে হবে বিকেলে সন্ধ্যার আগে, চৌধুরীর খাল নেমে ঘন্টা খানেক হাঁটলেই বনের মধ্যে হরিণের পালের দেখা পেতে পারেন। চোয়াখালি ও চোয়াখালি সমুদ্র সৈকত। চোয়াখালিতে গেলে খুব সকালে হরিণ দেখা যায় । মটর সাইকেল ওয়ালাকে বলে রাখুন খুব সকালে আপনাকে হোটেল থেকে নিয়ে হরিন দেখিয়ে আনবে। ম্যানগ্রোভ বন। নিঝুম দ্বীপ বনায়ন প্রকল্প।

নামার বাজার সমুদ্র সৈকত। নামার বাজার থেকে হেঁটে যেতে ১০ মিনিট লাগে। এখান থেকে সূর্য উদয় ও সূর্যাস্ত দেখতে পাবেন, এখানে বারবিকিউ করে মজা পাবেন।দমার চর। এই চরের দক্ষিণ দিকে নতুন একটি সমুদ্র সৈকত আছে যাকে বলে “কুমারী দ্বীপ”। খুব সকালে এখানে অনেক নাম না জানা পাখির দেখা পাওয়া যায়।আপনি যদি হাতে সময় নিয়ে যান, তবে ট্রলার ভাড়া করে ভোলার ঢালচর, চর কুকরি – মুকরি থেকে ঘুড়ে আসতে পারেন।

কখন যাবেনঃ

অক্টোবর থেকে এপ্রিল ১৫ তারিখ এখনকার আবহাওয়া অনুযায়ী নিঝুম দ্বীপ ভ্রমণের জন্য ভালো। অন্য সময় বর্ষা থাকে ও ঝড়ের কারনে মেঘনা নদী ও সাগর উত্তাল থাকে।বর্ষাকালে গেলে পুরা হাটু সমান কাদা থাকবে ও পুরা দ্বীপের এমাথা ও মাথা আপনাকে হেঁটে পার হতে হবে, কাঁদার কারণে রাস্তায় কিছু চলতে পারেনা। তবে মাছ খেতে পারবেন প্রচুর। শীত কালে গেলে রাস্তাঘাট সব ভালো পাওয়া যাবে, খালের মধ্যে পানি কম থাকবে, ফলে বনের মধ্যে যেকোনো জায়গায় যাওয়া যাবে, বিকেলে হরিণের পাল দেখা যাবে, সমুদ্র সৈকত শুকনো থাকবে। শরতকাল আর বসন্তকাল সবচেয়ে উপযুক্ত সময়

কি খাবেনঃ

খাবার জন্য নিঝুম দ্বীপের নামার বাজারের কিছু হোটেল আছে। বিদ্যুৎ নেই বলে সব টাটকা খাবার পাওয়া যায়। দেশি মুরগি, মাছ, হাঁস, গরুর মাংশ সব খড়ির চুলায় রান্না করা। যদি নিজের পছন্দের কিছু খেতে চান, তাহলে তাঁদের বলুন অথবা তাদেরকে কিনে দিলে তারা রান্না করে দিতে পারবে। আর প্রায় সব থাকার হোটেলে বারবিকিউর চুলা থাকে, হোটেলের বয়দের সহায়তায় অথবা আপনি নিজেই বানিয়ে নিতে পারেন বিভিন্ন মাছ বা মুরগির বারবিকিউ। মাছের জন্য হোটেল সোহেলের পাশে ২টি আড়ত আছে।

আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে বা এই বিষয়ে কোন কিছু জানানোর থাকলে নীচের মন্তব্য বিভাগে লিখতে ভুলবেন না । আপনার ভ্রমণ পিয়াশি বন্ধুদের সাথে নিবন্ধটি শেয়ার করে নিন যাতে তারাও জানতে পারে ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *