টুপামারী পুকুর | কুড়িগ্রাম

0
241
টুপামারী পুকুর | কুড়িগ্রাম

সংক্ষিপ্ত বিবরনঃ

কুড়িগ্রামের দর্শনীয় স্থানের মধ্যে জনপ্রিয় টুপামারী( Tupamari Pukur ) বহুমূখী কৃষি কমপ্লেক্সের দৃষ্টিনন্দন পুকুর। এটি উলিপুর উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের গোড়াই এ কে সি রোডের ১২৫ মিটার পূর্ব দিকে অবস্থিত। প্রায় ২৫ একর জায়গা জুড়ে পুকুরটি অবস্থিত।

পুকুরের পাড়ে সগর্বে দাঁড়িয়ে আছে বিভিন্ন বনজ ও ফলজ বৃক্ষ। দূর থেকে দেখে মনে হয় যেন কোনো একটি বন দাঁড়িয়ে আছে আর পাশ দিয়ে বয়ে গেছে এক খরস্রোতা নদী। শীতকালে এ জায়গায় অনেক লোকের ভিড় জমে, মনে হয় যেন মেলা বসেছে।

এছাড়াও পহেলা বৈশাখ, ঈদ, পূজা এবং বিভিন্ন সময়ে দর্শনার্থীর ভিড় জমে চোখে পড়ার মত। শৌখিন মৎস্য শিকারীরা রংপুর, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাটসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আসে মৎস্য শিকারের জন্য।

স্থানীয়রা জানান, কয়েক যুগ আগেও এখানে টুপামারী নামে কোনো পুকুর ছিল না। ছিল নিচু এক জলাভূমি। সেই জলাভূমিতে মাছ চাষ কিংবা ফসল উৎপাদন কোনোটাই সম্ভব ছিল না। এর প্রধান কারণ জলাভূমিগুলো ছিল খণ্ড খণ্ড ডোবায় ভরা।

বর্ষাকালে জলাভূমিগুলো পানিতে ভরে গেলে সেখানে দেশীয় মাছ আশ্রয় নিত। সেই দেশীয় মাছের মধ্যে ছিল কৈ মাছ আর কৈ মাছের পোনা। স্থানীয় ভাষায় কৈ মাছের পোনাকে কৈটিপি বা কৈটোপা বলা হত। এই কৈ টোপা থেকে জলাভূমির নাম টোপামারীর দোলা হিসেবে কালক্রমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে যেটি টুপামারী নামে পরিচিতি পায়।

জানা গেছে, ১৯৭৫ সালে তৎকালীন থানা প্রজেক্ট অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) জাফর উদ্দিন মণ্ডল ও উলিপুর টিসিসিএএর সভাপতি আব্দুল করিম মিয়া এ সংস্থার সমবায়ীদের ভবিষ্যৎ কল্যাণের উদ্দেশ্যে সংস্থার কার্যনিবার্হী পরিষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক খণ্ড খণ্ড ডোবার মালিক আলেফ উদ্দিন মণ্ডল, আজিজুল হক মণ্ডলের কাছ থেকে ১৫ দশমিক ৭৫ একর জমি ক্রয় করেন।

১৯৮০ সালে তৎকালীন থানা প্রজেক্ট অফিসার আবির উদ্দিন খান ও সংস্থার সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন মুকুট সংস্থার কার্যনিবার্হী পরিষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আরো ৮ দশমিক ৭৪ একর জমি বিভিন্ন মালিকদের কাছ থেকে ক্রয় করেন। এরপর ওই বছরই টিসিসিএ কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় প্রশাসনের প্রচেষ্টায় এবং তৎকালীন সরকারের মন্ত্রী মাইদুল ইসলামের সক্রিয় সহযোগিতায় সমবায়ীদের বৃহত্তর স্বার্থে খণ্ড খণ্ড ডোবাগুলোকে কাবিখা’র আওতায় খনন করে এটি একটি পুকুরে রূপান্তর করা হয়।

টুপামারীর পুকুর কুড়িগ্রাম জেলার দর্শনীয় স্থানগুলোর একটি। শীতকালে এখানে পিকনিক পার্টি ভিড় করে। বছরের অন্য সময়েও দর্শণার্থীদের আনাগোনা লক্ষ্য করা যায়।

কিভাবে যাবেনঃ

পিকনিক ষ্পটে কুড়িগ্রাম থেকে আসতে বাস ভাড়া লাগবে ১০ টাকা, অটো রিক্সা ভাড়া লাগবে ১৫ টাকা এবং রিক্সা আসতে ভাড়া লাগবে ২৫ টাকা এবং কুড়িগ্রাম শাপলা চত্বর থেকে অটো রিক্সা রিজার্ভ ভাড়া লাগে ৮০ টাকা। অপরদিকে উলিপুর থেকে উক্ত পিকনিক ষ্পটে যেতে ভাড়া লাগবে বাসে ১০ টাকা, অটো রিক্সা ভাড়া লাগবে ১৫ টাকা এবং রিক্সা আসতে ভাড়া লাগবে ২৫ টাকা এবং উলিপুর উপজেলা মোড় থেকে অটো রিক্সা রিজার্ভ ভাড়া লাগে ৮০ টাকা এবং চিলমারী থেকে যেতে বাসে লাগবে ২৫ টাকা, অটো রিক্সায় ৩৫ টাকা এবং রিক্সায় ৫০ টাকা।

আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে বা এই বিষয়ে কোন কিছু জানানোর থাকলে নীচের মন্তব্য বিভাগে লিখতে ভুলবেন না । আপনার ভ্রমণ পিয়াশি বন্ধুদের সাথে নিবন্ধটি শেয়ার করে নিন যাতে তারাও জানতে পারে ।