রাজার পাহাড়

রাজার পাহাড় | শেরপুর

সংক্ষিপ্ত বিবরনঃ

পাহাড়( Rajar Pahar ) আর নদী দিয়ে ঘেরা দেশের ছোট্ট সুন্দর প্রান্তিক জেলা শেরপুর। শেরপুরের গারো পাহাড় সৌন্দর্যের এক অপরূপ লীলাভূমি। ভারতের মেঘালয়ের পাদদেশে অবারিত সবুজের সমারোহ নিয়ে এই গারো পাহাড়ের অবস্থান। ছোট বড় অসংখ্য টিলা ভূমি, শাল গজারীর গাছ, পাহাড়ের নিচে বিস্তৃত সবুজ প্রান্তর সব মিলিয়ে ভ্রমণ বিলাসীদের জন্য আকর্ষণীয় সব উপাদান ছড়িয়ে আছে এই জায়গায়। বিশেষ করে রাজার পাহাড়ের দৃশ্য সত্যিই নজর কাড়ে। এই পাহাড় যে কতো মনোমুগ্ধকর যারা একবার দৃশ্য অবলোকন করেছেন শুধু তারাই অনুভব করতে পারবেন। 

শেরপুর জেলার শ্রীবরদী পৌর শহর থেকে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরে কর্নঝোরা বাজার সংলগ্ন রাজার পাহাড়ের অবস্থান। এই পাহাড় নিয়ে জনশ্রুতি রয়েছে। প্রাচীনকালে সম্ভ্রান্ত রাজ বংশের জনৈক এক রাজার অবস্থানের কারণে এখানকার নাম হয় রাজার পাহাড়। গারো পাহাড়ের যতগুলো পাহাড় রয়েছে তার মধ্যে রাজার পাহাড়ের উচ্চতা সবচেয়ে বেশি। তাই এর বৈশিষ্ট্যও আশেপাশের অন্যান্য পাহাড়গুলোর তুলনায় ব্যতিক্রম। এর চূড়ায় রয়েছে শতাধিক হেক্টরের সবুজে ছাওয়া সমতল ভূমি। এখানে উঠে এলে দূরের আকাশকেও কাছে মনে হয়।  অপূর্ব সৌন্দর্য মন্ডিত রাজার পাহাড়ের চারিদিকে আছে হরেক প্রজাতির গাছ গাছালি। এর চূড়ার বিশাল সমতল ভূমিতে যেতে সরু পথ আর অদ্ভুত এক নির্জনতা আপনাকে মুগ্ধ করবেই। 

পাহাড়ের পাশেই রয়েছে আদিবাসী জনপদ বাবেলাকোনা। অসংখ্য উচু টিলায় ঘেরা অন্যবদ্য এই গ্রাম প্রকৃতির উজাড় করা সৌন্দর্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। প্রাচীনকাল থেকেই এখানে গড়ে উঠেছে জনবসতি। বাবেলাকোনায় গারো , হাজং ও কোচ অধ্যুষিত আদিবাসীদের সংস্কৃতির ভিন্নমাত্রায় রয়েছে বিচিত্র জীবনধারা। এ জনপদের চলমান জীবন সংগ্রামের এক বিরল দৃশ্য। আদিবাসীদের সংস্কৃতি, সংরক্ষণ ও চর্চার কেন্দ্র হিসেবে রয়েছে বাবেলাকেনা কালচারাল একাডেমী, জাদুঘর, লাইব্রেরী, গবেষণা বিভাগ ও মিলনায়তন । এখান থেকে আদিবাসীদের সম্পর্কে জানা যাবে অনেক কিছুই। পাহাড় থেকে ঝোপঝাড়ের আড়ালে কুলকুল শব্দ করে নেমে এসেছে কর্ণঝোরা ও ঢেউফা নদী। বর্ষাকালে ঢেউফা নদী জোয়ারে কানায় কানায় ভরে উঠে। কিন্তু শীতে হয় শীর্ণকায়া। তবে খরস্রোতা এই নদীর পানি কখনই কমেনা। এর বুকের বিশাল বালুচর দেখলে মনে হবে যেন পাহাড়ের কূলঘেষা এক বিকল্প সমুদ্র সৈকত। 

প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা এই পাহাড়ের প্রায় দেড়শ ফুট উচুঁ টিলার ওপর থেকে দেখা যায় ভারতের অনেক কিছুই। পাহাড়টি পর্যটন কেন্দ্র হলে ভ্রমণ পিপাসুদের চাহিদা পূরণে যোগ হবে আরেক নতুন মাত্রা।আর আদিবাসী বেকারদের জন্য তৈরি হবে কর্মসংস্থানের নতুন পথ। দেশি বিদেশি পর্যটকদের পদভারে আরও মুখরিত হয়ে উঠবে আপাত নির্জন নিভৃত এই অঞ্চলটি।

কিভাবে যাবেনঃ

রাজধানী ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ হয়ে শেরপুরে যাতায়াতই সবচেয়ে উত্তম। এছাড়া উত্তরবঙ্গ থেকে টাঙ্গাইল-জামালপুর হয়েও সড়ক পথে যাওয়া যাবে শেরপুরে। দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে বাসে কিংবা যে কোনো যানবাহনে করে আসা যায় শেরপুর শহরে। এখান থেকে মাত্র ৩৪ কিলোমিটার দূরে শ্রীবরদীর কর্ণঝোরা বাজার। সেখান থেকে বাস, টেম্পুসহ অটোরিক্সা নিয়ে চলে যাওয়া যাবে রাজার পাহাড় থেকে বাবেলাকোনায়।

আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে বা এই বিষয়ে কোন কিছু জানানোর থাকলে নীচের মন্তব্য বিভাগে লিখতে ভুলবেন না । আপনার ভ্রমণ পিয়াশি বন্ধুদের সাথে নিবন্ধটি শেয়ার করে নিন যাতে তারাও জানতে পারে ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *