ডিবির হাওর | সিলেট

সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ

লতা-পাতা গুল্মে ভরা বিলের পানিতে শত সহস্র ফোটা লাল শাপলা( dibir haor sylhet ) যেন হার মানায় সূর্যের আভাকেও। সবুজ পাতার আচ্ছাদনে ঢাকা পড়েছে বিস্তীর্ণ জলরাশি। লাল শাপলার হাঁসি যেন মনের বন্ধ দুয়ার খুলে দেয়।আর এমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে সাক্ষাত পেতে হলে আপনাকে যেতে হবে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার উত্তর-পূর্ব দিকে অবস্থিত পাশাপাশি চারটি বিলে। সেখানে গেলেই দেখা মিলবে চোখজুড়ানো এমন দৃশ্যের। এ রকম অপরূপ সাজে সেজে রয়েছে বিলগুলো।

স্থানীয়দের কাছে এই বিল পরিচিত ‘ডিবি বিল’নামে। বিলগুলোর নাম হচ্ছে ডিবি বিল, কেন্দ্রী বিল, হরফকাটা বিল ও ইয়াম বিল। চারটি বিলের অবস্থান বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে।

গন্তব্য স্থলে পৌঁছালে দূর থেকেই দেখবেন সবুজের মধ্যে অসংখ্য ক্ষুদ্র লাল বৃত্ত। দূরত্ব কমার সঙ্গে সঙ্গে একসময় স্পষ্ট হয়ে উঠবে আগাছা আর লতা-পাতা গুল্মে ভরা বিলের পানিতে শত সহস্র লাল শাপলা। দেখে মনে হবে, পুব আকাশে সূর্যের লাল আভা যেন হার মেনেছে রক্তিম শাপলার কাছে।

বিলের মাঝে আগাছা আর লতা-পাতায়, বিলের হাজারো শাপলা, চোখ জুড়ায় পথচারীদের। বিলের যতই কাছে যাওয়া যায়, ততই বাড়তে থাকে লালের আধিক্য। প্রায় ৭০০ একর জায়গায় বিস্তৃত চারটি বিলের পুরোটাই ঢাকা পড়েছে শাপলায়।

প্রস্ফুটিত শাপলা ফুল দেখতে অনেকটা আলোকরশ্মির মতো। এসব শাপলা ফুটে রাতের স্নিগ্ধতায় আর দিনের আলোতে আস্তে আস্তে বুজে যায়। একটি শাপলার স্থায়িত্ব প্রায় সাতদিন পর্যন্ত থাকে। চাইলে আপনি ডিবির হাওরে নৌকায় নিয়ে ঘুরতে পারেন।

কিভাবে যাবেনঃ
ঢাকা, চট্টগ্রাম দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকেই যদি ঘুরে আসতে চান সিলেটের লাল শাপলার ডিবির হাওরে। তাহলে প্রথমেই আপনাকে বাস কিংবা ট্রেনে সিলেটে পৌঁছাতে হবে।

খুব সকাল পৌঁছানোর পর আপনাকে শাপলার মূল সৌন্দর্য দেখতে হলে তখনই রওনা করতে হবে। কেননা রোদ ওঠার সাথে সাথে শাপলার আসল সৌন্দর্য্য লোপ পেতে থাকে।

সিলেট শহরে পৌঁছে আপনি শহরের দক্ষিণ সুরমার হুমায়ুন রশীদ থেকে, উত্তর সুরমার সোবহানীঘাট কিংবা টিলাগড় পয়েন্ট থেকেও জাফলংগামী বাস পাবেন। বাসটি জৈন্তাপুর বাজার হয়ে যাবে। আপনাকে সেখানেই নামতে হবে। লোকাল বাস ভাড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা নিবে।
তবে এই বাসে করেই আপনি বিজিবি ক্যাম্প লিখা নামক জায়গায় নামতে পারেন। রাস্তার বিজিবি ক্যাম্প লিখা সাইনবোর্ডের ডান পাশের রাস্তা দিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট হাটলেই পেয়ে যাবেন লাল শাপলার বিল।

তবে খুব সকালে যেহেতু আপনি যাচ্ছেন, পথে খাবারের প্রয়োজন হলে আপনাকে জৈন্তা বাজারে নামতে হবে। খাওয়া দাওয়া শেষ করে আপনাকে বাজারে থাকা টমটমযোগে চলে যেতে হবে ডিবির হাওরে। টমটম রিজার্ভ ভাড়া পড়বে ১৫০ টাকা। তবে সিলেট থেকে চাইলে সিএনজি রিজার্ভ করেও যেতে পারবেন। ভাড়া পড়বে ৮০০ থেকে ১২০০ এর মধ্যে।

কোথায় থাকবেনঃ
তামাবিল জৈন্তাপুর রোডে বেশ কিছু রিসোর্ট গড়ে উঠেছে, চাইলে সেইসব রিসোর্টে থাকতে পারবেন অথবা থাকার জন্য সিলেটে ফিরে আসতে পারেন। সিলেট শহরে বিভিন্ন মানের হোটেল পাওয়া যায়। হোটেল হিল টাউন, গুলশান, দরগা গেইট, সুরমা, কায়কোবাদ ইত্যাদি হোটেলে আপনার প্রয়োজন ও সামর্থ্য অনুযায়ী থাকতে পারবেন। এছাড়া শহরের লালবাজার এলাকায় বেশ কিছু মানসম্মত রেস্ট হাউজ আছে। এগুলোতে ৪০০ থেকে ৩০০০ টাকায় সহজেই রাত্রি যাপন করতে পারবেন।

আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে বা এই বিষয়ে কোন কিছু জানানোর থাকলে নীচের মন্তব্য বিভাগে লিখতে ভুলবেন না । আপনার ভ্রমণ পিয়াশি বন্ধুদের সাথে নিবন্ধটি শেয়ার করে নিন যাতে তারাও জানতে পারে ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *