মং রাজার বাড়ি | খাগড়াছড়ি

সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ

পার্বত্য অঞ্চলে বাঙালিদের পাশাপাশি অনেক পাহাড়িও সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। খাগড়াছড়ির ঐতিহ্যবাহী মং সার্কেল রাজা( Mong Circle khagrachari ) মংপ্রু সাইনের অবদানও কম ছিল না। অথচ খাগড়াছড়ির মুক্তিযুদ্ধকালীন ঘটনাপ্রবাহ, মং রাজার মংপ্রুসাইনের ভূমিকা অনেক ক্ষেত্রেই মূল্যায়ন বাইরে থেকে গেছে। মুক্তিযুদ্ধে যথেষ্ট অবদান সত্ত্বেও স্বাধীনতার ৪৬ বছরেও স্বীকৃতি না পাওয়ায় এ নিয়ে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা এবং রাজ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

মুক্তিযোদ্ধারা জানান, মুক্তিযদ্ধে ঐতিহ্যবাহী মং সার্কেল রাজা মং প্রু সাইনের ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। কিন্তু সে অনুযায়ী স্বীকৃতি মেলেনি মং রাজ পরিবারের।

সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মংসাথোয়াই চৌধুরী বলেন, ‘ঠিক আমরা যখন মুক্তিযুদ্ধে যাই, তখন মং সার্কেল রাজা মংপ্রু সাইনের অবদান ছিল অনেক। রাজা রূপাইছড়িতে থাকাকালে মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। তিনি যুবকদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করতে ফুটবল পর্যন্ত কিনে দিয়েছিলেন। রাজা বলতেন, খেলো-খাও-আর ইয়ুথ ক্যাম্পে গিয়ে নাম লিখাও। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ কর এবং দেশকে স্বাধীন কর।’

মুক্তিযোদ্ধা মংসাথোয়াই চৌধুরী আরো জানান, ‘স্বাধীনতার পরও আমি ১২ জন মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে দীর্ঘ দুই বছর ধরে মং রাজ পরিবারে তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেছিলেন। আমার জানা মতে মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ মং সার্কেল রাজা তেমন কোনো স্বীকৃতি পাননি। মরণোত্তর হলেও রাজাকে স্বীকৃতি দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি।’ আরেক মু্ক্তিযোদ্ধা ফিলিপ ত্রিপুরা জানান, অংশগ্রহণের দিক থেকে সংখ্যায় কম হলেও অনেক পাহাড়ি মুক্তিযুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করেছেন।

মুক্তিযুদ্ধে মং রাজার ব্যাপক সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মং রাজা মুক্তিযোদ্ধাদের রেশন দিয়েছেন। খাবার দিতেন। আশ্রয় দিতেন। বলতে গেলে আশ্রয়দাতাও ছিলেন তিনি। শরণার্থীদের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থাই করে দিতেন রাজা। মুক্তিযোদ্ধাদের হাতিয়ার দিতে না পারলেও দেশ স্বাধীন করার জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সবই করেছিলেন।’
এ ব্যাপারে রাজা মংপ্রুসাইনের নাতনি সুইচিংপ্রু চৌধুরী হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, ‘এটা খুবই দুর্ভাগ্য যে রাজা মংপ্রুসাইন স্বীকৃতি পেলেন না।’

তিনি জানান, মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবহনের জন্য রাজা দুটি জিপ গাড়ি দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, হাজার হাজার শরণার্থীর জন্য রাজার ফান্ড উম্মুক্ত করে দিয়েছিলেন। চালের ভাণ্ডার খুলে দিয়ে সাহায্য করেন। সে কারণে রাজা তৎকালীন ভারতীয় সেনাবাহিনী কর্তৃক উপাধিও লাভ করেন। ‘অথচ স্বাধীনতার এত বছর পরও স্বীকৃতি না পাওয়াকে দুর্ভাগ্য বলা ছাড়া আর কিছুই নয়।’ বলেন সুইচিংপ্রু চৌধুরী

অবস্থানঃ খাগড়াছড়ি

আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে বা এই বিষয়ে কোন কিছু জানানোর থাকলে নীচের মন্তব্য বিভাগে লিখতে ভুলবেন না । আপনার ভ্রমণ পিয়াশি বন্ধুদের সাথে নিবন্ধটি শেয়ার করে নিন যাতে তারাও জানতে পারে ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *