সংক্ষিপ্ত বিবরনঃ
তেরো শতকের সূচনালগ্ন থেকে দেশে মুসলিমদের শাসনব্যবস্থা চালু হওয়ায় এখনো বিভিন্ন স্থানে খোঁজ মেলে প্রাচীন ইসলামী স্থাপত্যশিল্পের। ঠিক তেমনি পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত মজিদবাড়িয়া শাহি মসজিদ( Masjid Bahria Mosque )টি এমন এক নিদর্শন, যা প্রায় সাড়ে ৫০০ বছর ধরে বহন করে চলছে সুলতানি আমলের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি।
ইলিয়াস শাহি বংশের এক স্বাধীন সুলতান ছিলেন রুকনদ্দিন বরবক। তিনি ১৪৪৯ থেকে ১৪৭৪ সাল পর্যন্ত বাংলা শাসন করেন। তাঁর শাসনামলে ১৪৬৫ সালে মসজিদটি নির্মাণ করেন খান-ই-মোয়াজ্জেম উজিয়াল খান। মসজিদ-সংশ্লিষ্ট একটি শিলালিপি থেকে মসজিদটির ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায়। তবে শিলালিপিটি বর্তমানে মসজিদসংলগ্ন স্থানে নেই। এটি এখন কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটি জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে, যা ১৮৬০ সালে কমিশনার মি. রেলির রিপোর্ট থেকে জানা যায়। মজিদবাড়িয়ার এ মসজিদ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে অনেক কল্পকথাও প্রচলিত রয়েছে। তাঁদের ধারণা, অলৌকিকভাবে মাটির নিচ থেকে উঠে এসেছে এ মসজিদ। তবে কালের বিবর্তনে ইতিহাসের সাক্ষী হওয়া মসজিদটি আজও ব্যবহার করে চলছেন স্থানীয় মুসল্লিরা।
যা যা দেখবেনঃ
৪৯ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩৫ ফুট প্রস্থবিশিষ্ট মসজিদটির প্রধান কামরা বর্গাকারে নির্মিত। এর ভেতরে রয়েছে সুনিপুণ কারুকার্যখচিত তিনটি মেহেরাব, ছয়টি মিনারসদৃশ আট কোণবিশিষ্ট পিলার। সুলতানি আমলে নির্মিত মসজিদটির অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে রড-সিমেন্ট ছাড়াই চুন-সুরকি ও পোড়ামাটির ইট দিয়ে তৈরি বিশাল আকৃতির একটি গম্বুজ। মসজিদসংলগ্ন স্থানেই রয়েছে ইয়াকিন শাহ-কালা শাহর কবর ও বিশাল একটি দীঘি। এ দীঘি নিয়েও এলাকার মানুষের মধ্যে প্রচলিত আছে বিভিন্ন ধরনের কাল্পনিক গল্প।
কিভাবে যাবেনঃ
ঢাকা-পটুয়াখালী যাতায়াতের জন্য লঞ্চে ভ্রমণই সবচেয়ে আরামদায়ক ও তুলনামূলক ভাবে বেশি নিরাপদ। সদরঘাট থেকে সুন্দরবন, কাজল, সাত্তার খান, প্রিন্স আওলাদ ও এ আর খান লঞ্চযোগে পটুয়াখালী পৌঁছতে লাগবে ৩০০-১০০০ টাকা।
পাশাপাশি সড়কপথেও পৌঁছানো যায় পটুয়াখালী। ঢাকার গাবতলি বাস-স্ট্যান্ড থেকে সারাদিনই ঘণ্টায় ঘণ্টায় সাকুরা পরিবহনসহ অন্যান্য পরিবহনের বাস ছাড়ে পটুয়াখালী উদ্দেশ্যে। অধিকাংশ বাসই যায় পাটুরিয়া ঘাট পার হয়ে, তবে কিছু বাস মাওয়া ঘাট হয়েও পটুয়াখালী পৌঁছায়। এক্সপ্রেস বাস সার্ভিসের প্রায় সবকটিই ফেরি-পারাপার।
এছাড়া ঢাকার গুলিস্তান বা যাত্রাবাড়ী থেকে বি আর টি সি সহ অন্যান্য পরিবহনে মাওয়া এসে ফেরী,লঞ্চ বা স্পীড বোট যোগে নদী পার হয়ে কাওড়াকান্দি থেকে বি আর টি সি সহ অন্যান্য পরিবহনে কলাপাড়া আসা যায় ।
অসি সম্প্রতি ঢাকা-কলাপাড়া রুটে সাকুরা পরিবহন ও বি আর টি সি’র এ সি সার্ভিস চালু হয়েছে।
পটুয়াখালী থেকে মির্জাগঞ্জের মজিদবাড়িয়া যেতে খরচ হবে ১৫০ টাকা।